E-Paper

মধ্যরাতে দেশে ফিরতেই গ্রেফতার প্রজ্বল, দেশ ছেড়ে ‘পালিয়ে যাওয়া’র মাসখানেক পর ধৃত

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে প্রায় ১টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে নামে জার্মানির মিউনিখ থেকে আসা লুফৎহানসার উড়ান। ওই উড়ানেরই যাত্রী ছিলেন প্রজ্বল। তার পরেই প্রজ্বলকে হেফাজতে নেয় সিট।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ০৮:০৫
প্রজ্বল রেভান্না।

প্রজ্বল রেভান্না। —ফাইল ছবি।

অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মাসখানেক বাদে ফিরতেই গ্রেফতার হলেন জেডিএসের সাসপেন্ডেড সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি প্রজ্বল রেভান্না। শতাধিক মহিলাকে ধর্ষণ-যৌন নিগ্রহের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। হাজার তিনেক যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়ে হাসনে লোকসভা ভোটের ঠিক আগে। এর পরেই একের পর এক মহিলা প্রজ্বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। দলীয় কর্মী থেকে, সরকারি কর্মচারী এমনকি বাড়িতে কর্মরত মহিলারাও প্রজ্বলের থেকে নিস্তার পাননি বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে প্রায় ১টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে নামে জার্মানির মিউনিখ থেকে আসা লুফৎহানসার উড়ান। ওই উড়ানেরই যাত্রী ছিলেন প্রজ্বল। তার পরেই প্রজ্বলকে হেফাজতে নেয় সিট। বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বেঙ্গালুরুতে সিটের অফিসে। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে খবর।

বেঙ্গালুরুতে প্রজ্বলের বিমান অবতরণের খবর পেয়েই প্রস্তুত ছিল ন’সদস্যের সিটের দল। সিট ছাড়াও ডেপুটি কমিশানারের নেতৃত্বে স্থানীয় পুলিশের একটি দল, কর্নাটক রিজ়ার্ভ পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছিল বিমানবন্দরে। প্রজ্বল পৌঁছনোর পরে তাঁর ছবি যাতে তুলতে না পারেন, সেই জন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে বিমানবন্দরে কর্মরত গ্রাউন্ড স্টাফদের মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়। আজ বেঙ্গালুরুতে সিআইডি অফিসের সামনের অংশ ঘিরে ফেলা হয়। শহর জুড়ে ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি।

প্রজ্বলের গ্রেফতারের দাবিতে আজ হাসনে বিশাল পদযাত্রা ও জনসভার আয়োজন করেছিল ফেডারেশন অব কর্নাটক স্টেট পিপলস মুভমেন্ট নামের একটি সংগঠন। হাসনের হেমবতী সার্কল থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। অংশ নিয়েছিলেন হাজার সাতেক মানুষ। সারা রাজ্যের ১১৩টি সংগঠনের সদস্যরা এই পদযাত্রায় যোগ দেন। পদযাত্রার পরে জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিপিএম নেত্রী সুভাষিণী আলি। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের একটাই দাবি— প্রজ্বল রেভান্না-সহ সমস্ত অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। জামিন নয়। সোজা গ্রেফতার।’’ আর প্রতিবাদ-কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া দলিত সংঘর্ষ সমিতির নেত্রী মাভাল্লি শঙ্করের কথায়, ‘‘কন্যাকুমারীতে ধ্যানে না বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত ছিল হাসনে এসে নিপীড়িত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলা।’’

সাংসদ হওয়ার সুবাদে কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি জার্মানি গিয়েছিলেন। তাঁকে দেশে ফেরাতে বিদেশ মন্ত্রককে প্রজ্বলের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করার আর্জি জানায় কর্নাটক সরকার। যৌন হেনস্থা-র্ধষণের একের পর এক অভিযোগ সামনে আসায় জেডিএস শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে চাপ বাড়ান দলের একাংশ নেতা-কর্মী। এই পরিস্থিতিতে নাতিকে দেশে ফেরার জন্য বার্তা দেন জেডিএস প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়াও।

তিন দিন আগে এক ভিডিয়ো-বার্তায় প্রজ্বল জানিয়েছিলেন, অবিলম্বে দেশে ফিরছেন তিনি। শুক্রবার, ৩১ মে, সকাল ১০টা নাগাদ তিনি সিটের সামনে হাজিরা দেবেন বলেও আশ্বাস দেন প্রজ্বল। তার পরে গত কাল জানা যায়, মিউনিখ থেকে বিমানে চড়ছেন প্রজ্বল। এসে পৌঁছবেন আজ মাঝরাতে।

বিদেশ মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের কথামতো গত ২৩ মে প্রজ্বলের বিরুদ্ধে শো কজ় নোটিস জারি করা হয়েছিল। কেন তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হবে না, সেই কারণ দর্শানোর জন্য প্রজ্বলকে ১০ দিন, অর্থাৎ ২ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। আজ যদি প্রজ্বল শেষ পর্যন্ত দেশে না ফেরেন, তা হলে তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্ট অবিলম্বে বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর।

গত কালই প্রজ্বলের আগাম জামিনের আবেদন করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। আদালত রায় স্থগিত রেখে প্রজ্বলের আইনজীবীকে রবিবার আদালতে হাজিরা দিতে বলেছে। সংবাদ সংস্থা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Prajwal Revanna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy