প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথায়, বিহারে চলছে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকার। সেই সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী সম্রাট চৌধরির ‘ডাবল’ জন্ম সাল ঘিরে বিতর্কে এখন সরগরম ভোটমুখী বিহারের রাজনীতি! উপ-মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ তুলে তাঁকে বরখাস্তের জন্য হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিল প্রশান্ত কিশোরের (পি কে) দল ‘জন সুরজ’।
বিহারে তারাপুর হত্যাকাণ্ডে ১৯৯৫ সালে অভিযুক্ত হয়েছিলেন শকুনি চৌধরির পুত্র সম্রাট। কুশাওয়াহ সম্প্রদায়ের ৭ জন খুন হওয়ার সেই ঘটনায় তাঁর জেলও হয়েছিল। পি কে-র দলের অভিযোগ, সম্রাট সেই সময়ে আদালতে নথি দিয়ে দেখিয়েছিলেন যে, তাঁর বয়স ১৫। নাবালক বলে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান, পরে মামলা থেকেও রেহাই পান। কিন্তু সেই সম্রাটই ২০২০ সালে বিধানসভা ভোটে দাঁড়ানোর সময়ে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় জানান, তাঁর বয়স তখন ৫১। ‘জন সুরজে’র বক্তব্য, এই তথ্য ঠিক হলে ১৯৯৫ সালে সম্রাটের বয়স ছিল ২৬। অর্থাৎ তিনি নাবালক ছিলেন না। বয়সের শংসাপত্র নিয়ে জালিয়াতি, কমিশনকে বিভ্রান্ত করা এবং মামলা থেকে অন্যায় ভাবে ছাড় পাওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি দিয়েছেন ‘জন সুরজে’র জাতীয় সভাপতি উদয় সিংহ। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, সম্রাটকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করা এবং তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করুন। এই প্রসঙ্গে পি কে-র মন্তব্য, ‘‘বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দুনিয়ার একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ১১ বছরের মধ্যে দু’বার জন্মেছেন! এই ব্যক্তির জায়গা শুধু জেলই। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব এখন প্রধানমন্ত্রীর, কারণ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার খুনি, লুটেরাদের আড়াল করছেন।’’
সম্রাটের অবশ্য দাবি, তাঁকে ‘চক্রান্ত’ করে তারাপুর হত্যাকাণ্ডে জড়িয়েছিল লালুপ্রসাদের সরকার। সেই ষড়যন্ত্র পরে উদঘাটিত হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের পরিবার-সহ ২২ জনকে ফাঁসানো হয়েছিল ওই ঘটনায়। রাজনীতিতে অভিযোগ করা ও অভিযুক্ত হওয়া, কোনওটাই নতুন নয়। কিন্তু অভিযোগ করলেই সেটা সত্যি হয়ে যায় না। পি কে যা বলছেন, সেটা আদালতে গিয়ে প্রমাণ করুন।’’ পি কে-র দলের নেতা উদয় আবার পাল্টা জানিয়েছেন, সরকারি স্তরে সুরাহা না-হলে তাঁরা আদালতেই যাবেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)