রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে গেল আরও ৫০ টাকা। ফাইল চিত্র।
সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ করে শুক্রবার মধ্যরাতে রান্নার গ্যাসের (১৪.২ কেজির) দাম বেড়ে গেল আরও ৫০ টাকা। ফলে কলকাতায় একটি সিলিন্ডার কিনতে এখন থেকে গুনতে হবে ১০২৬ টাকা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধি এমনিতেই ঘুম কেড়েছে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির। যে সব অতি দরকারি ওষুধ ছাড়া বহু মানুষ এক পা-ও চলতে পারেন না, সম্প্রতি সেগুলির পিছনে খরচ বেড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় গ্যাস কেনার জন্য হাজার টাকার বেশি বার করতে বহু মানুষেরই নাভিশ্বাস উঠবে। বিশেষত তাতে সরকারি ভর্তুকি যেহেতু বহু জায়গায় নামমাত্র বা কার্যত শূন্যে ঠেকেছে। হোটেল-রেস্তরাঁয় ব্যবহারের বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের (১৯ কেজির) দাম অবশ্য এই দফায় ৯.৫০ টাকা কমে কলকাতায় ২৪৪৫ টাকা হয়েছে। মাসের প্রথমে সেটি ১০০ টাকারও বেশি বেড়েছিল।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্যারেল পিছু ১০০ ডলারের উপরে বেশ কিছু দিন ধরেই। প্রায় চার মাস স্থির থাকার পরে পাঁচ রাজ্যে ভোট মেটার পরে ২২ মার্চ থেকে লাগাতার কিছু দিন দাম বাড়ে পেট্রল-ডিজ়েলের। নজিরবিহীন গতিতে কলকাতায় লিটারে পেট্রল বাড়ে ১০.৪৫ টাকা আর ডিজ়েল ১০.০৪ টাকা। ২২ মার্চ এক লাফে ৫০ টাকা বেড়ে ৯৭৬ টাকা হয়েছিল গৃহস্থের হেঁশেলে ব্যবহারের এলপিজি সিলিন্ডারও। হাজার পেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আতঙ্কের প্রহর গোনা শুরু হয় তখনই। হালে কিছু দিন তেলের দর এক জায়গায় থমকে। কিন্তু তাতে যে আমজনতার স্বস্তি পাওয়ার কারণ নেই, তা ফের প্রমাণ হল শুক্রবার।
করোনাকালে রুজি-রোজগারে ধাক্কা লেগেছে দেশবাসীর বড় অংশের। চিকিৎসার পিছনে জলের মতো টাকা বেরিয়েছে অনেকের। সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। ফলে তেলে শুল্ক কমানো এবং গ্যাসে ভর্তুকি বাড়ানোর দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। যদিও তাতে কান দেওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। কেন্দ্র ও বিরোধী রাজ্যগুলি একে অন্যের কোর্টে দায় ঠেলতে ব্যস্ত। আর তেল সংস্থা সূত্রের দাবি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর তো চড়াই। ভূ-রাজনৈতিক কারণে গ্যাসও আগুন। ফলে এ মাসে দেশে
এলপিজি-র দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। মাস পয়লায় বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের দাম বাড়লেও বাড়িতে ব্যবহারের সিলিন্ডার বাড়েনি। এ বার সেই পথে হাঁটা হল বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে।
তবে তেলের দাম প্রতি দিন খতিয়ে দেখা হলেও, ভারতে বরাবরের প্রথা ছিল মাসের প্রথম দিন সংশোধন হবে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার। মোদী জমানায় সেই প্রথা ভেঙে মাসের মাঝে একাধিক বার কোনও ইঙ্গিত ছাড়াই আচমকা দাম বদলাচ্ছে। যা হঠাৎ করে চাপ বাড়াচ্ছে গ্রাহকের উপরে। উপরন্তু ভর্তুকি নামমাত্র বা শূন্য। এ বারও তা একই থাকবে কি না, সেটা বোঝা যাবে নতুন দামে গ্রাহকেরা সিলিন্ডার কেনার কয়েক দিন পরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy