লালকেল্লায় নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এএফপি।
কার্গিল যুদ্ধের সময়ই বোঝা গিয়েছিল, তিন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরকারের মসৃণ সমন্বয়ের জন্য এক জন ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ নিয়োগ করা দরকার। তার ২০ বছর পরে কাশ্মীর নিয়ে পাক-ভারত সম্পর্ক যখন ফের উত্তপ্ত, তখন সেই পদ তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় মোদী বলেন, ‘‘প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের নিয়ম বদলাচ্ছে। আমাদের তিন বাহিনীকে এক সঙ্গে এগোতে হবে। পারস্পরিক সমন্বয় জরুরি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ পদ তৈরি করা হবে।’’ চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ-ই প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির স্থায়ী সদস্য হবেন তিনি। বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়ত এই পদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে সরকারি সূত্রের খবর। চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ-এর ক্ষমতা, দায়িত্ব, মর্যাদা, পদের মেয়াদ ঠিক করতে প্রতিরক্ষা সচিবকে নিয়ে গঠিত কমিটি নভেম্বরে রিপোর্ট দেবে।
১৯৯৯-তে কার্গিল যুদ্ধের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি শোধরাতে গঠিত কে সুব্রহ্মণ্যম কমিটি চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ নিয়োগের সুপারিশ করেছিল। ২০১২-তে প্রাক্তন ক্যাবিনেট সচিব নরেশ চন্দ্রের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স সুপারিশ করে, চিফ অব স্টাফ কমিটির স্থায়ী চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হোক। এখন তিন সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে তৈরি চিফ অব স্টাফ কমিটিতে প্রবীণতমই চেয়ারম্যান হন। মোদী জমানায় অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি বি শেখতকরের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটিও চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ নিয়োগের সুপারিশ করেছিল।
শেখতকর আজ বলেন, “৪০ বছর আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।” তাঁর মতে, তিন বাহিনীর প্রকৃত সমন্বয় হলে জওয়ানের সংখ্যা কমিয়ে সেই অর্থ বাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজে লাগানো যাবে। কার্গিল যুদ্ধের সময়ের সেনাপ্রধান, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ভি পি মালিক মোদীর সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়ে বলেছেন, এতে জাতীয় নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।
সুব্রহ্মণ্যম কমিটির সুপারিশ খতিয়ে দেখতে গঠিত মন্ত্রিগোষ্ঠীর মত ছিল, রাজনৈতিক ঐকমত্য করে এই সিদ্ধান্ত হোক। কিন্তু অনেক রাজনৈতিক দলেরই মত ছিল, এতে এক জনের হাতে সামরিক বাহিনীর সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলিতে সামরিক অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা থেকেও আশঙ্কিত ছিলেন অনেকেই। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে ‘দৃঢ় ও সাহসী’ হিসেবেই আখ্যা দিচ্ছেন ফৌজি কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy