Advertisement
E-Paper

পাশে কংগ্রেস, আপাতত স্বস্তি

সব রাজনৈতিক দলকে পাশে পেতে উদ্যোগী হল মোদী সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৪
মুখোমুখি: নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানানোর পরে দিল্লির বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

মুখোমুখি: নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানানোর পরে দিল্লির বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

সব বিরোধী দলই আপাতত মোদী সরকারের পাশে। কিন্তু দু’দিন পরে তারাই ফের আক্রমণ শানাতে পারে ধরে নিয়ে পুলওয়ামা-হামলার প্রেক্ষিতে, সব রাজনৈতিক দলকে পাশে পেতে উদ্যোগী হল মোদী সরকার।

আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকেই ঠিক হয়, পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে রাজনৈতিক পদক্ষেপ করা হবে। সেই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের অনুরোধ করেন, আপাতত সবাই যেন রাজনৈতিক আক্রমণ থেকে দূরে থাকেন। এরপরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ শনিবার সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেন। রাজনাথ আজ শ্রীনগর ঘুরে এসেছেন। সেখানকার পরিস্থিতি ও সরকারের অবস্থান তিনি বিরোধী, শরিক দলের নেতাদের জানাবেন।

রাজধানীতে চর্চা— মোদী সরকারের পক্ষে ‘স্বস্তি’র কারণ হল, চাকরির অভাব, কৃষির সঙ্কট, সিবিআই-ইডি-কে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানো, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অধিকার খর্ব করার মতো অভিযোগ থেকে নজর আপাতত জওয়ানদের উপর

হামলার দিকে ঘুরে গিয়েছে। বিরোধীদের প্রাক-নির্বাচনী জোট তৈরির সিদ্ধান্ত ঘিরে উত্তেজনা আপাতত স্তিমিত। পুলওয়ামার হামলার পর সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরযেওয়ালা। তবে আজ সকালেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী নিজে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, এ কে অ্যান্টনি, গুলাম নবি আজাদকে পাশে নিয়ে ঘোষণা করেন, গোটা বিরোধী শিবির সরকারের পাশে। প্রধানমন্ত্রী মোদীও আজ বলেন, ‘‘যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের ভাবনা আমি বুঝি। সেই অধিকারও রয়েছে। কিন্তু একজোট হয়ে এই হামলার মোকাবিলা করতে হবে।’’

তাতে সাড়া দিয়ে রাহুলও বলেন, ‘‘এই দেশকে কোনও শক্তি ভাঙতে পারবে না, বিভাজিত করতে পারবে না। গোটা বিরোধী শিবির আমাদের জওয়ান ও সরকারের সঙ্গে রয়েছে।’’ রাহুল এ-ও জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী দু’দিন কংগ্রেস রাজনৈতিক আক্রমণে যাবে না। কংগ্রেস, বিজেপি এ দিনের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করেছে। রাহুলের সঙ্গে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদের মধ্যাহ্নভোজন বাতিল হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন (প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় যাঁকে সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য নিত্য কটাক্ষ করত বিজেপি) বলেন, ‘‘এখন বিতর্কিত বিষয় তোলার সময় নয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা একজোট হয়ে লড়ব।’’ কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভুলে যাবেন না, মুম্বই সন্ত্রাসের পরপরই বিজেপি সংবাদপত্রে বড়

বড় বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছিল, ‘অকর্মণ্য সরকার, অদক্ষ সরকার, ভোট দিন বিজেপিকে’।

তবে এরপর যে মোদী সরকারের দিকে আঙুল উঠবেই, তা আজও বোঝা গিয়েছে। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী মোদীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘এই সব ফাঁকা বুলি আর হাওয়া-হাওয়াই বয়ানবাজি করে কিছু লাভ হবে না। কড়া ভাষায় নিন্দা করেও কাজ চলবে না। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কেন্দ্র, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে এগিয়ে আসতে হবে।’’ এসপি নেতা আজম খানও কটাক্ষ করেছেন, ‘‘সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা, এমনকি গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকেও রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজ করতে না দিলে তো খারাপ ঘটনা ঘটবেই।’’ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও এই ধরনের হামলা রুখতে গতকাল স্থায়ী পদক্ষেপের দাবি করেছিলেন।

সর্বদলীয় বৈঠকে কৌশল ঠিক করতে আজ বিকেলে সনিয়া গাঁধীর বাসভবনে কংগ্রেসের কোর কমিটির বৈঠক হয়। জম্মু-কাশ্মীরে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের প্রতিনিধি দল পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। গুলাম নবি আজাদ আগামিকাল পুলওয়ামা যাবেন। আপাতত ‘যুদ্ধবিরতি’ হলেও, আগামী দিনে সন্ত্রাসবাদ দমনে ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে আক্রমণে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে কংগ্রেস।

Pulwama Attack পুলওয়ামা পুলওয়ামা হামলা Narendra Modi Terrorism Terror Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy