জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের বক্তব্যে যে সত্যতা রয়েছে তা ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন গোয়েন্দারাও। —ফাইল চিত্র।
সিআরপি-র কনভয়ে জঙ্গি হামলার পর নরেন্দ্র মোদী-সহ বিজেপি নেতারা যখন পাকিস্তানকে নিশানা করতে ব্যস্ত তখন বেসুর জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। রাখঢাক না করেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, গত কালের হামলার পিছনে রয়েছে গোয়েন্দা ব্যর্থতা। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যপালের ওই স্বীকারোক্তিতে কার্যত অস্বস্তিতে কেন্দ্র।
জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব এখন কেন্দ্রের হাতে। রাজ্য পুলিশ, আধা সেনা এবং সেনার মধ্যে সমন্বয় রাখার ইউনিফায়েড কম্যান্ডের দায়িত্বেও রয়েছেন স্বয়ং রাজ্যপাল। জঙ্গি হামলা সম্পর্কে সেই রাজ্যপাল বলছেন, ‘‘এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমাদের কাছে ওই জঙ্গির সম্পর্কে তথ্য ছিল। কিন্তু সে যে ফিঁদায়ে হয়ে গিয়েছে, তা জানা ছিল না। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এটা গোয়েন্দাবাহিনীর ব্যর্থতা।’’ রাজ্যপাল মালিক জানিয়েছেন, আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমেদ দার সন্দেহভাজন তালিকায় ছিল। কিন্তু মাঝে সে হারিয়ে যায়। তাকে ধরা যায়নি। রাজ্যপালের ওই বক্তব্যই, নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়হীনতার প্রমাণ বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। যা কি না কেন্দ্রের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে।
রাজ্যপাল সত্যপালের বক্তব্যে যে সত্যতা রয়েছে তা ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন গোয়েন্দারাও। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে তাঁরা একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এলো কোথা থেকে? সেগুলি গাড়িতে তুলল কারা? কী ভাবে তা নিরাপত্তা বাহিনীর নজর এড়িয়ে পৌঁছল সিআরপি-র কনভয়ে? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, উপত্যকার যুবকেরা কোথায়, কী ভাবে, কাদের কাছে, আত্মঘাতী হামলার পাঠ নিলেন?
গোয়েন্দাদের মতে, পুলওয়ামার হামলা পাকা মাথার কাজ। এর জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতির প্রয়োজন। কারণ দিনের আলোয় জাতীয় সড়কে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে, ঠিক কোথায়-কখন হামলা চালাতে হবে সে বিষয়ে তথ্য জঙ্গিদের কাছে ছিল। এ ধরনের হামলার জন্য সঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচন করার ব্যাপারও ছিল।
গত কালের ঘটনার পরে গোয়েন্দাদের কাছে চ্যালেঞ্জ হল, স্থানীয় যুবকদের এ ভাবে ফিঁদায়ে হয়ে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে কি না, সে দিকে নজরে রাখা। সূত্রের খবর, এক সময় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরে ছিল আদিল। সেখানে আফগানিস্তানের জঙ্গিরা তাকে গাড়ি-বোমা ব্যবহার শেখায়। উপত্যকার কতজন যুবকের হদিশ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না, তা খুঁজে বার করাই গোয়েন্দাদের প্রাথমিক লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy