Advertisement
E-Paper

চিন রফা মানবে কি, প্রশ্ন সেটাই

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে নতুন আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ ঘোষণা করে সীমান্ত থেকে পুরোপুরি সেনা সরানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৫০
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় বাহিনীর টহলদারি— ফাইল চিত্র।

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় বাহিনীর টহলদারি— ফাইল চিত্র।

মস্কোয় ভারত এবং চিনের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের পরে পাঁচ দফা রফাচুক্তি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাকে বাস্তবায়িত করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলকে মার্চ মাসের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে না বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।

বৃহস্পতিবারের বৈঠক ও যৌথ বিবৃতির পরে গত কাল ভারত এবং চিনের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে যে ঘরোয়া বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে অবস্থানগত ফারাক স্পষ্ট। ভারতের পক্ষ থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন এবং তাকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার কথা একাধিক বার বলা হলেও চিনের ভাষ্যে তার কোনও উল্লেখ
দেখা যায়নি।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে নতুন আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ ঘোষণা করে সীমান্ত থেকে পুরোপুরি সেনা সরানোর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কিন্তু ঘটনা হল, এই সেনা সরানোর কাজটি করতে হবে দু’পক্ষকেই। দু’দেশের মধ্যে সমন্বয় না-থাকলে সেটা সম্ভব নয়। এই সংঘাতের আবহে যা আদৌ নেই।

তা ছাড়া, সীমান্তে চিনের পরিকাঠামো অনেক ভাল। তারা ভারতের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিপুল সেনা মোতায়েন করতে সক্ষম। ফলে ভারতীয় সেনা সূত্রের বক্তব্য, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ভারত যতটা পিছিয়ে যাবে, চিনা‌ সেনার তার থেকে বেশি পিছিয়ে যাওয়া দরকার। তবেই সামঞ্জস্য বজায় থাকবে এবং ভবিষ্যতে সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে। কিন্তু, সূত্রের মতে, চিন তাতে অবশ্যই রাজি হবে না।

আরও পড়ুন: আক্রান্ত লক্ষের দোরে, অনুমতি মিললে ভারতে পরীক্ষায় তৈরি সিরাম

প্রশ্ন উঠছে আরও একটি বিষয় নিয়েও। যেখানে খোদ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান নিয়েই দু’দেশের মধ্যে মতান্তর রয়েছে, সেখানে কোন রেখার প্রেক্ষিতে সেনা পিছোনো হবে? কার্গিল যুদ্ধের সময় সেনাপ্রধান ছিলেন বেদপ্রকাশ মালিক। তিনি বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পরে টুইট করেছেন, ‘ড্রইং রুমে বসে কূটনৈতিক শব্দ বিনিময়ের পরে শেষ পর্যন্ত গোটা বিষয়টি ফের চলে এল সামরিক ক্ষেত্রে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান সম্পর্কে ঐকমত্য ছাড়া কী ভাবে সেনা পিছোনো হবে?’ তাঁর মতে, ‘চিন এই কূটনৈতিক বৈঠকগুলি করে সময় ব্যয় করে। সেই সময়ে নিজেদের ঘাঁটি শক্তিশালী করে। সামরিক শক্তি বাড়ায়। ফলে এই সব কূটনৈতিক বাগাড়ম্বরে না-ভুলে সেনার উচিত অত্যন্ত সতর্ক থাকা।’

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, জুন মাসের ১৫ তারিখ গালওয়ানে রক্তপাতের পর ভারত এবং চিনের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা হয়েছে। সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে তো বটেই, এমনকি দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ওয়াং ই-র মধ্যে ফোনেও কথা হয়েছে। ভারত-চিন সীমান্ত সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধিরাও (ভারতের পক্ষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল) ফোনে কথা বলেছেন। সীমান্তে শান্তি ফেরাতে পদক্ষেপ করার ব্যাপারে তখনও চিন একাধিক বার ইতিবাচক কথাই বলেছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আজ হঠাৎ মস্কোর সিদ্ধান্তকেই যে তারা অক্ষরে অক্ষরে মানবে, তার নিশ্চয়তা কোথায় ?

Ladakh India China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy