বিহারে অতি অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত মাল্লা সম্প্রদায়ের মোট জনসংখ্যায় ভাগ মাত্র আড়াই শতাংশ। সেই মাল্লা সম্প্রদায়ের নেতা, বিকাশশীল ইনসান পার্টির প্রধান মুকেশ সাহনিকে বিরোধীদের মহাগঠবন্ধন উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে। কিন্তু বিহারে যে মুসলিমরা ১৭ শতাংশের বেশি এবং যাঁরা বরাবর লালুপ্রসাদের আরজেডি-র ভোটব্যাঙ্ক, তাঁদের কেন বঞ্চিত করা হল? এনডিএ এবং এমআইএম-এর এই প্রশ্নের মুখে আজ তেজস্বী যাদব সিমরি বখতিয়ারপুরে আরজেডি-র বিধায়ক ইউসুফ সালাউদ্দিনের বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই প্রচার শুরু করলেন।
মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে প্রচারে আজ তেজস্বী দাবি করেছেন, গত ২০ বছর ধরে নীতীশ কুমারের সরকার যে কাজ করতে পারেনি, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলে তা ২০ মাসের মধ্যে করে দেখাবেন। তেজস্বীর দাবি, তাঁর সরকার ‘পড়াই-দাবাই-সিঁচাই-কামাই-সুনবাই-কারবাই’ বা শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কৃষি-রোজগার-ন্যায় ও সুশাসনের নীতি মেনে চলবে। বৃহস্পতিবার মহাগঠবন্ধনের তরফে তেজস্বীর নাম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি ইবিসি-ভুক্ত মাল্লা নেতা মুকেশের নাম উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হয়েছিল। আজ বিজেপি নেতা রবি কিষেণ, এনডিএ শরিক চিরাগ পাসোয়ান এ নিয়ে আরজেডি তথা বিরোধী জোটকে নিশানা করেছেন। চিরাগের বক্তব্য, ‘‘আমার বাবা রামবিলাস পাসোয়ান ২০০৫ সালে আরজেডি-কে পরামর্শ দিয়েছিলেন, এক জন মুসলিমকে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। কিন্তু তা হয়নি। আরজেডি-র কাছে মুসলিমরা শুধুই ভোটব্যাঙ্ক।’’ আসাদুদ্দিন ওয়াইসির দল এমআইএম নেতাদের অভিযোগ, যাঁদের জনসংখ্যায় ভাগ ২ শতাংশের ঘরে, তাঁদের নেতা উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। যে যাদবদের জনসংখ্যায় ভাগ ১৪ শতাংশ, তাঁদের নেতা মুখ্যমন্ত্রী। আর যে মুসলিমদের সংখ্যা ১৮ শতাংশের কাছাকাছি, তাঁদের বিজেপির জুজু দেখিয়ে চুপ করিয়ে বসিয়ে রাখা হয়।
জবাবে আরজেডি, কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, আপাতত সাহনির নাম উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হলেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, মহাগঠবন্ধন ক্ষমতায় এলে দলিত, মুসলিমের মতো অন্য সমাজের নেতাদের মধ্যে থেকে আরও উপমুখ্যমন্ত্রী করা হবে। সামাজিক সমীকরণে ভারসাম্য রাখতে আজ তেজস্বী প্রচার শুরু করেছেন মহাগঠবন্ধনের দুই ইবিসি সম্প্রদায় ভিত্তিক দলের নেতা মুকেশ সাহনি এবং আই পি গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে। সাহনি যেমন মাল্লা সম্প্রদায়ের নেতা, তেমন তাঁতি ও পানের ব্যবসায় যুক্ত পান সম্প্রদায়ের দল ইন্ডিয়ান ইনক্লুসিভ পার্টির নেতা আই পি গুপ্ত। ছিলেন আরজেডি নেতা মহম্মদ কারি শোয়েবও। বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে আরজেডি-র পাল্টা অভিযোগ, বিহারের জনসংখ্যায় উচ্চবর্ণের ভাগ ১২ শতাংশ হলেওবিজেপি প্রার্থী তালিকায় উচ্চবর্ণের নেতা ৪৮ শতাংশ। আর তফসিলি জাতি-জনজাতির ভাগ মাত্র ১২ শতাংশ, যদিও তাঁদের জনসংখ্যায় ভাগ ২২ শতাংশ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)