E-Paper

খসড়ায় থেকেও শেষে নাম বাদ, নানা প্রশ্ন বিহারে

এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে বিহারে ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে ৭ কোটি ৪১ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৫৭ জনের।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৩৭
বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা হওয়া শুরুর ১০ দিন আগে পর্যন্ত কেউ ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন করতে পারবেন।

বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা হওয়া শুরুর ১০ দিন আগে পর্যন্ত কেউ ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন করতে পারবেন। —প্রতীকী চিত্র।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ, শনিবারই দু’দিনের সফরে বিহারে পা রাখছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ বেঞ্চ। তবে তার আগে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ও সংশয়ের কোনও খামতি থাকছে না! বিহারে বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার শেষে যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন, তাতে যোগ-বিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। সুপ্রিম কোর্টে আগামী ৭ অক্টোবর এসআইআর সংক্রান্ত মামলার শুনানির দিকেও নজর রাখছে তারা।

এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে বিহারে ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে ৭ কোটি ৪১ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৫৭ জনের। চলতি বছরের ২৪ জুন এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময়ে সে রাজ্যে ভোটার তালিকায় নাম ছিল ৭ কোটি ৮৯ লক্ষ। ঝাড়াই-বাছাইয়ের পর্ব শেষে আগের তালিকা থেকে প্রায় ৪৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা হওয়া শুরুর ১০ দিন আগে পর্যন্ত কেউ ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন করতে পারবেন। তবে সেই প্রক্রিয়া হবে এসআইআর বহির্ভূত।

কমিশন বিহারে বিশেষ আমূল সংশোধনের প্রথম পর্ব শেষে গত ১ অগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল। সেখানে ভোটার সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ২৪ লক্ষ ৫ হাজার ৭৫৬। প্রাথমিক পর্বেই প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম কাটা গিয়েছিল, যা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছিল বিভিন্ন বিরোধী দল। খসড়া তালিকার প্রেক্ষিতে আপত্তি বা সংশোধন এবং নতুন নাম তোলার আবেদনের জন্য এক মাস সময় (সুপ্রিম কোর্টে মামলার জেরে সেই এক মাসের পরেও অবশ্য আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে) দেওয়া হয়েছিল। অগস্টের খসড়া তালিকা থেকে আবার তিন লক্ষ ৬৬ হাজার নাম বাদ পড়েছে এবং অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২১ লক্ষ ৫৩ হাজার নাম। সব মিলিয়ে খসড়ার তুলনায় চূড়ান্ত তালিকায় প্রায় ১৮ লক্ষ নাম বেড়েছে। খসড়া তালিকার সঙ্গে প্রতি জেলাতেই চূড়ান্ত তালিকায় ভোটারের সংখ্যার কিছু তফাত হয়েছে। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, খসড়া তালিকায় বাদ পড়েও প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে আবার নাম ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন, এমন ভোটারও চূড়ান্ত তালিকায় আছেন।

বিরোধী দলগুলির দাবি, খসড়া তালিকা থেকে তিন লক্ষ ৬৬ হাজার নাম কীসের ভিত্তিতে বাদ গেল, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা মিলছে না। কংগ্রেস, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের মতো দলগুলির প্রশ্ন, খসড়া তালিকায় থাকা ভোটারদের অনেকে কি প্রয়োজনীয় নথি দিতে পারেননি বলে নাম কাটা গিয়েছে? নাকি অন্যদের তোলা আপত্তির জেরে নাম বাদ গিয়েছে? একই ভাবে ২১ লক্ষ ৫৩ হাজার নাম অন্তর্ভুক্তির মধ্যেও ‘অস্বাভাবিকতা’ আছে বলে আরজেডি-সহ বিরোধীদের দাবি। এই বিষয়ে বিশদে কোনও ব্যাখ্যা এখনও দেয়নি কমিশন।

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, বিহারে এখন পুরুষ ভোটারের সংখ্যা তিন কোটি ৯২ লক্ষ ৭ হাজার ৮০৪ এবং মহিলা তিন কোটি ৪৯ লক্ষ ৮২ হাজার ৮২৮। মহিলা ভোটার কমেছে ৬.১% (২২ লক্ষ ৭০ হাজার) এবং পুরুষ ভোটার কমেছে ৩.৮% (১৫লক্ষ ৫০ হাজার)। মহিলা ভোটার বাদ যাওয়ার হার বেশি হওয়া নিয়েও প্রশ্ন আছে। কমিশনের একটি সূত্রের মতে, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বহু মহিলা আছেন, যাঁরা নেপাল থেকে বিবাহ সূত্রে এসে বিহারের বাসিন্দা হয়েছেন। কাগজপত্রের গেরোয় অন্য জায়গা থেকে আসা মহিলাদের অনেকেরই নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ হয়ে গিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট আগেই বলেছিল, বড়সড় কোনও অসঙ্গতি পাওয়া গেলে গোটা এসআইআর প্রক্রিয়াই বাতিল হতে পারে। এমতাবস্থায় সর্বোচ্চ আদালতের দিকেই ফের দৃষ্টি রাখছে বিরোধী শিবির।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bihar Election Commission Special Intensive Revision

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy