মেঘালয়ের সোহরায় ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের একে একে জামিন পাওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে রঘুবংশী পরিবার।
বৃহস্পতিবার শিলংয়ের একটি স্থানীয় আদালত মামলার অন্যতম অভিযুক্ত শিলোম জেমসকে ৫০,০০০ টাকার বন্ড ও দু’জন জামিনদারের শর্তে জামিন মঞ্জুর করেছে। উল্লেখ্য রাজাকে খুন করার পরে ইন্দোরে প্রেমিক রাজ কুশওয়াহার কাছে ফেরার পরে রাজার স্ত্রী সোনম রঘুবংশী শিলোমের কাছ থেকেই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছিল। সোনম ধরা পড়ার পরে শিলোম সোনমের ট্রলি ব্যাগ, মোবাইল, জামাকাপড়, টাকা, গয়না সব সরিয়ে ফেলে। পুড়িয়ে দেয় ব্যাগ ও মোবাইল। প্রথম অস্বীকার করলেও পরে তাকে জেরা করেই উদ্ধার হয় রাজা ও সোনমের সব গয়না। কিন্তু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত না থাকায় আদালত কঠোর শর্তসাপেক্ষে শিলোমকে জামিন দেয়। আদালতের নির্দেশ, শিলোম তদন্তে কোনওভাবেই প্রভাব ফেলতে পারবে না। মামলার সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তিকে প্রলোভন, হুমকি দেওয়া, প্রমাণ নষ্ট করা, সাক্ষী ও তদন্তকারীদের প্রভাবিত করা চলবে না এবং তদন্তকারীরা ডাকলেই তাকে হাজির হতে হবে।
এর আগে, সোনমের ফ্ল্যাটের প্রকৃত বাড়িওয়ালা লোকেন্দ্র সিংহ তোমর ও নিরাপত্তারক্ষী বলবীরও জামিন পেয়েছে।
এই জামিনের খবর জানার পর রাজার মা উমা রঘুবংশীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে এবং তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। তিনি বলেন, “যারা আমার ছেলের খুনের প্রমাণ নষ্ট করেছে তারা আজ মুক্ত। আমরা প্রশাসনের কারও কাছ থেকে কোনও খবর পাইনি। আমি দরকার হলে শিলংয়ে গিয়ে আমার ছেলের ন্যায়বিচার চাইব।”
রাজার ভাই বিপিন রঘুবংশী অভিযোগ করে বলেন, “সোনমের ভাই গোবিন্দ কলকাঠি নেড়ে মামলা দুর্বল করছে। সে রাজ ও সোনমের বিয়ে দিয়ে অভিযুক্তদের রক্ষা করতে চাইছে। দেড় মাস হয়ে গেল আমরা এখনও রাজার মৃত্যুর প্রমাণপত্র হাতে পেলাম না। এ দিকে অভিযুক্তরা একে একে জামিন পাচ্ছে। এখন আমাদের নিরাপত্তা নিয়েই ভয় হচ্ছে।”
বিপিনের আরও বক্তব্য, “সোনমের সঙ্গে গোবিন্দের জেল থেকে বেশ কয়েক বার কথা হয়েছে। আগে সোনমের ফাঁসির দাবি করা গোবিন্দ ও তার পরিবার এখন সোনমের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেছে। প্রথমে সোনম রাজাকে ঠকাল। এখন তার পরিবার আমাদের পরিবারকে ঠকাচ্ছে।”
রাজার বড় ভাই সচিন রঘুবংশী বলেন, “মেঘালয় পুলিশের তদন্তে গাফিলতির জন্যেই অভিযুক্তরা এত দ্রুত জামিন পাচ্ছে। আমাদের ভরসা শেষ হয়ে যাচ্ছে। রাজার হত্যাকাণ্ডের পরে এত দিনেও কেস ডায়েরি আদালতে জমা পড়েনি। দুর্নীতি না হলে এটা সম্ভব নয়। যদি বাকি অভিযুক্তরাও ছাড়া পায়, আমাদের পুরো পরিবার গণআত্মহত্যা করবে। মেঘালয় সরকারকে সেই দায়নিতে হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)