Advertisement
E-Paper

‘দয়া করে বলবেন কি, কথা বলার এটা কোন কায়দা?’

এক জন জবাব এড়িয়ে ছুড়ে দিলেন বিদ্রুপ আর কটাক্ষ। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্য জন গালিবের কবিতা উদ্ধৃত করে সেই বিদ্রুপ ফিরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘‘আমার প্রশ্নের জবাব কোথায়।’’ ইনি কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৭

এক জন জবাব এড়িয়ে ছুড়ে দিলেন বিদ্রুপ আর কটাক্ষ। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

অন্য জন গালিবের কবিতা উদ্ধৃত করে সেই বিদ্রুপ ফিরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘‘আমার প্রশ্নের জবাব কোথায়।’’ ইনি কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী।

গত কালই গুজরাতে মোদীর খাসতালুক মেহসানায় এক সভায় রাহুল অভিযোগ করেছিলেন, সহারা ও আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর থেকে ঘুষ নিয়েছেন মোদী। আয়কর দফতরের কাছেই সেই নথি আছে। এই অভিযোগের পরে আজ গোটা দেশের নজর ছিল ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশের দিকে। সেখানে বারাণসীতে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোদী। অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশেরই বাহরাইচে সভা ছিল রাহুল গাঁধীর।

বারাণসীর অনুষ্ঠানে ঘুষ নিয়ে কোনও কথা না বলে রাহুলকে নানা ভাবে বিদ্রুপই করে গেলেন মোদী। রাহুল যে ভঙ্গিতে সভায় বক্তৃতা করেন, এ দিন সেই কায়দা অনুকরণ করে হাত নেড়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের এক যুব নেতা যখন থেকে বলতে শিখেছেন, তখন থেকে আমার খুশির সীমা নেই!’’ রাহুল বলেছিলেন, তিনি মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুললে ভূমিকম্প হবে। এ দিন সেই মন্তব্য নিয়ে তীব্র বিদ্রুপ করে মোদীর বক্তব্য, রাহুল মুখ খোলার পরে বোঝা গিয়েছে, তাঁর কথায় কিছুই হবে না।

এ দিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকেও এক হাত নেন মোদী। নোট-বাতিলের বিরোধিতা করে মনমোহন বলেছেন, দেশে ৫০ শতাংশই গরিব। আর চিদম্বরম বলেছেন, বহু গ্রামেই বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। এই অবস্থায় ডিজিটাল হবে কী করে? মোদীর কটাক্ষ, ‘‘এঁরা এত দিন ধরে অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেও এত গরিব রেখেছেন?’’ পাশাপাশি বলেন, সংসদে হট্টগোল করে বিরোধীরা বেইমানদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মোদী নীরব থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই তাকে অস্ত্র করতে দেরি করেননি রাহুল। বারাণসীতে মোদীর সভার ঘণ্টা তিনেক পরে বাহরাইচে ‘জনআক্রোশ সভা’য় তিনি শুরুই করলেন, ‘‘আমাকে যত খুশি উপহাস করুন, কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব দিন।’’ এই প্রসঙ্গেই মোদীর বিদ্রুপের পাল্টা গালিবকে উদ্ধৃত করেন রাহুল বলেন, ‘‘হর এক বাত পে কহতে হো তুম কে তু কেয়া হ্যায়, তুমহি কহো কে এ আন্দাজে গুফ্তগু কেয়া হ্যায় (সব সময়েই তুমি আমায় প্রশ্ন কর, তুমি কে? দয়া করে বলবে কি, কথা বলার এটা কোন কায়দা?’’

এই সভার কিছু আগে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে সহারা ডায়েরির একটি অংশ পোস্ট করেন রাহুল। অভিযোগ, ডায়েরির ওই অংশেই বলা আছে মোদীকে ঘুষ দিয়েছিল সহারা। টুইটারে ওই অংশটি পোস্ট করে রাহুল প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘মোদীজি জবাব দিন, ২০১২-১৩ সালে এই দশ প্যাকেটে কী ছিল?’’ রাহুলের অভিযোগ, সহারা থেকে ৯ বার এবং বিড়লা গোষ্ঠীর থেকে ১ বার ঘুষ নিয়েছেন মোদী। বাহরাইচের সভায় দুই হাতে সেই দুই নথি তুলে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে রাহুল বলেন, ‘‘আড়াই বছর ধরে আয়কর দফতরের কাছে এই নথি পড়ে আছে। এটা শুধু আমার অভিযোগ নয়, দেশের কোটি কোটি যুবক, যাঁদের আপনি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁরাও প্রশ্ন তুলছেন, এটা সত্যি না মিথ্যা?’’ এ দিন ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে এক সভায় দুর্নীতি প্রশ্নে মোদীকে আক্রমণ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও।

প্রধানমন্ত্রী যে রাহুলের তোলা অভিযোগের জবাব এড়িয়ে যাবেন, তা বিলক্ষণ জানেন কংগ্রেস নেতারা। তিনি রাহুল গাঁধীকে ‘যুব নেতা’ বলে যে বিদ্রুপ করেছেন, তাকেই স্বীকৃতি হিসেবে ধরছে কংগ্রেস। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এক স্ট্রোকে গোটা বিরোধী শিবিরের নেতা তো হয়েইছেন, সেই সঙ্গে জাতীয় রাজনীতিতে লড়াইটা রাহুল বনাম মোদীতে পর্যবসিত করতে পেরেছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। বিজেপি নেতাদের যুক্তি, রাহুলের তোলা অভিযোগের সারবত্তা নেই। ওই অভিযোগ আগেই সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। বরং রাহুলের অভিযোগকে ‘তাচ্ছিল্য’ করে প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওঁকে নিয়ে বিচলিত নন।

বিজেপির এই যুক্তি উড়িয়ে কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, বফর্সের অভিযোগ ওঠার পরে সংসদে এসে রাজীব গাঁধীকেও মুখ খুলতে হয়েছিল। তখন রাজীব বলেছিলেন, তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউ এই দুর্নীতিতে যুক্ত নন। পরে সেই কথাই সত্যি প্রমাণ হয়েছিল। কিন্তু মোদী এ ধরনের কোনও দায়বদ্ধতার ধার ধারেন না।

Rahul Gandhi Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy