তিন তালাক বিলে বাধা দেওয়ার জন্য বিজেপি যখন কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে দেশ জুড়ে প্রচারের নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন নরেন্দ্র মোদীকে অস্বস্তিতে ফেলতে লোকপাল বিলকে অস্ত্র করলেন রাহুল গাঁধী।
সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে, রীতিমতো ছড়া কেটে রাহুল গাঁধী প্রশ্ন ছুড়েছেন, ইউপিএ-সরকারের আমলে লোকপাল বিল পাশ হয়েছিল। তার পরে চার বছর কেটে গেলেও লোকপাল গঠন হল না কেন? যাঁরা নিজেদের গণতন্ত্রের রক্ষাকর্তা বলেন, দায়বদ্ধতার অগ্রদূত বলেন, তারা কি শুনছেন?
রাহুল টুইট করেছেন, ‘বীত গ্যয়া চার সাল, নহীঁ আয়া লোকপাল, জনতা পুছে এক সওয়াল, কব তক বাজাওগে ঝুঠি তাল?’ সেই সঙ্গে তিনি ২০১৩-তে লোকপাল বিল পাশের পর নরেন্দ্র মোদীর টুইটও তুলে দিয়েছেন। মোদী সেখানে বিজেপির তৎকালীন সংসদের দুই কক্ষের দুই বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।
আচমকা লোকপাল নিয়ে এমন প্রশ্নের মুখে পড়ে অস্বস্তিতে পড়েছে মোদী সরকারও। কারণ, গত এক বছর ধরে লোকপাল আইনে সংশোধনী নিয়ে বসে রয়েছে। ইউপিএ-সরকারের শেষ পর্বে, ২০১৩-য় লোকপাল ও লোকায়ুক্ত আইন পাশ হলেও, মোদী জমানায় লোকপাল গঠন হয়নি। উল্টে এক বছর আগে আইনে সংশোধনের জন্য বিল আনে মোদী সরকার। তাতে সরকারি কর্মী, ট্রাস্টি এবং এনজিও-র পরিচালন পর্ষদের সদস্যদের সম্পত্তির হিসেব দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল।
ওই বিলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তার রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে সাত মন্ত্রীর কমিটি তৈরি হয়। সেই কমিটিও রিপোর্ট দিয়েছে এক বছর হয়ে গিয়েছে। সরকারের যুক্তি, মন্ত্রীদের কমিটির রিপোর্ট এখনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রীদের গোষ্ঠী যেখানে এক মাসের মধ্যে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিলের খসড়া তৈরি করে ফেলেছে, সেখানে লোকপাল বিল নিয়ে মন্ত্রীদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখতেই মোদী সরকার কেন এত সময় নিচ্ছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল।
কংগ্রেসের নেতাদের ব্যাখ্যা, মোদী সরকার তথা বিজেপির সবটাই রাজনীতির দাড়িপাল্লায় মাপে। এখন ভোট কুড়োতে তিন তালাক বিল নিয়ে সরকার হইচই করছে। আবার ইউপিএ-সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে সে সময় বিজেপি লোকপাল বিল নিয়ে হইচই করেছিল। ইউপিএ-সরকার লোকপাল বিল পাশ করালেও সেটা বিজেপির জয় বলেই প্রচার করেছিলেন মোদী। এখন তিনিই লোকপাল বিল নিয়ে নীরব। প্রয়োজনে ভোটের সময় দেখে আবার লোকপাল বিল ঝোলা থেকে বার করা হবে।
রাহুলের আগে অণ্ণা হজারেও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ফের আন্দোলন শুরু করার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনিও লোকপাল নিয়োগ না করা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy