আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরপর্বে রামকে ‘পৌরাণিক চরিত্র’ বলে বর্ণনা করেন কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শুধু তা-ই নয়, রাহুল এ-ও জানান, তিনি মনে করেন না বিজেপির ধারণার সঙ্গে হিন্দুত্বের ধারণার মিল রয়েছে! রামকে ‘পৌরাণিক চরিত্র’ বলে মন্তব্য করায় রাহুলকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। তাঁকে ‘রামবিরোধী’ বলে অভিহিত করে তারা।
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাহুল। সেখানে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, হিন্দু জাতীয়তাবাদের আধিপত্যের যুগে সমস্ত সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি কী ভাবে প্রণয়ন করা উচিত? তারই এক দীর্ঘ জবাব দেন রাহুল। সেখানেই কংগ্রেস নেতা টেনে আনেন রামকে। রাহুলের মতে, ভারতের কোনও মহান সমাজ সংস্কারক বা রাজনৈতিক চিন্তাবিদই ধর্মান্ধ ছিলেন না। রাহুলের কথায়,‘‘আমাদের সকল পৌরাণিক ব্যক্তিত্ব, যেমন ভগবান রামও ছিলেন একই ধরনের। তিনি ক্ষমাশীল এবং করুণাময় ছিলেন। বিজেপি যা বলে, তাকে আমি মোটেই হিন্দু ধারণা বলে মনে করি না।’’
রাহুল তাঁর হিন্দুত্বের ধারণাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমি হিন্দুত্বের ধারণাকে অনেক বেশি বহুত্ববাদী, স্নেহশীল, সহনশীল এবং উন্মুক্ত বলে মনে করি। প্রতিটি রাজ্য এবং সম্প্রদায়ে এমন মানুষ আছেন, যাঁরা এই ধারণাগুলির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। গান্ধীজি তাঁদের মধ্যে এক জন। আমার মনে হয়, ভয় থেকেই মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণা এবং ক্রোধের জন্ম নেয়। আপনি যদি কখনও ভয় না পান, তবে কারও উপর ঘৃণাও জন্মাবে না।’’
আরও পড়ুন:
রাহুলের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি। সমাজমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যের একটি অংশ তুলে ধরে রাহুলকে ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে কটাক্ষ করেছে। বিজেপির মুখপাত্র শেহজ়াদ পুনাওয়ালা লেখেন, ‘‘হিন্দু এবং রামের অপমান করা কংগ্রেস দলের পরিচয় হয়ে উঠেছে। ওরা হলফনামা দিয়ে রামের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। শুধু তা-ই নয়, রামমন্দির নির্মাণের বিরোধিতা করে। রাহুল গান্ধী ও সনিয়া গান্ধী রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি, যা ওঁদের রামবিরোধী এবং হিন্দুবিরোধী মনোভাবের প্রতিফলন।’’ বিজেপির দাবি, হিন্দু ধর্মবিশ্বাসকে উপহাস করাই কংগ্রেসের মানসিকতা।