নরেন্দ্র মোদী জনসভায় গিয়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য শোনাতে শুরু করেছেন। জুন মাসে মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্তিতেও পাকিস্তানে সামরিক অভিযান ও জাতগণনার সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে প্রচারের পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তার পাল্টা জবাবে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এই ‘অপারেশন সিঁদুর’-কে কেন্দ্র করেই মোদী সরকারের বিদেশনীতির ব্যর্থতা তুলে ধরতে চাইছেন। আজ রাহুল অভিযোগ তুলেছেন, ভারতের বিদেশনীতি ভেঙে পড়েছে।
গত কয়েক দিনে রাহুল গান্ধী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করেছিলেন। মোদীর কাছে রাহুলের প্রশ্ন ছিল, তিনি কেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি নিয়ে চুপ? জয়শঙ্করের কাছে তাঁর প্রশ্ন ছিল, তিনি কেন সেনা অভিযানের খবর আগাম পাকিস্তানকে দিয়েছিলেন? আজ রাহুল জয়শঙ্করকে ‘জেজে’ সম্বোধন করে প্রশ্ন করেছেন, কেন ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে এক হাইফেনে জুড়ে ফেলা হচ্ছে? কেন ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে একটা দেশও পাকিস্তানের নিন্দা করল না? কে ট্রাম্পকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে বলল? কংগ্রেসের ব্যাখ্যা, রাজা জয়চাঁদ পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিরুদ্ধে মহম্মদ ঘোরিকে সাহায্য করেছিলেন। তাই রাহুল বিদেশমন্ত্রীকে ‘জয়চাঁদ জয়শঙ্কর’ ওরফে ‘জেজে’ বলে সম্বোধন করছেন। জয়শঙ্কর ইউরোপ সফরে গিয়েও এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। উত্তর দিতে পারছেন না।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে আজ অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস সমর্থিত চন্দ্রশেখরের সরকার ১৯৯১-এর এপ্রিলে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি করেছিল, যে কোনও সামরিক মহড়ার খবর পাকিস্তানকে আগাম দেওয়া হবে। এখন রাহুল তা নিয়ে জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করছেন। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার যুক্তি, ১৯৯১-এর এপ্রিলের আগেই কংগ্রেস চন্দ্রশেখর সরকারের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। চন্দ্রশেখরের ছেলে, বর্তমানে বিজেপি নেতা নীরজ শেখরকে জিজ্ঞাসা করলেই তা জানা যাবে। নিশিকান্তের যুক্তি, নরসিংহ রাও সরকারের আমলে এই চুক্তি কার্যকর হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি, ওই চুক্তি শান্তির সময়ের জন্য। যুদ্ধের সময়ের জন্য ছিল না।
রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ গোটা দেশের ১৪০ জন কংগ্রেস মুখপাত্রের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করে বার্তা দিয়েছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ হোক বা জাতগণনা, আগ্রাসী হয়ে কংগ্রেসের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। তবে বিজেপির ‘কম শিক্ষিত’ মুখপাত্রদের মতো নিচু স্তরে নামলে চলবে না। মোদী সরকারের চাপের মুখে জাতগণনার সিদ্ধান্ত, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে কংগ্রেসের বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ১৪০ জনের প্রত্যেকের সঙ্গে রাহুল আলাদা ভাবে ছবি তোলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)