ভোট ‘চুরি’ এবং বিহারে ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (এসআইআর) নিয়ে বিতর্কের আবহেই রবিবার থেকে নীতীশ কুমারের রাজ্যে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। বিহারে দলের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অখিলেশ প্রসাদ সিংহ জানিয়েছেন, রবিবার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। ১৬ দিন, ২০টির বেশি জেলা ঘুরে ১৩০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ১ সেপ্টেম্বর পটনা ময়দানে এই যাত্রা শেষ হবে। ১৭ অগস্ট অর্থাৎ রবিবার থেকেই বিহারে শুরু হচ্ছে রাহুলের এই ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’। ঘটনাচক্রে, রাহুল যে দিন ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করছেন, অর্থাৎ রবিবারেই আবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠেক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন।
দলীয় সূত্রের খবর, ১৬ দিনের এই সফরে গয়া, মুঙ্গের, ভাগলপুর, কাটিহার, পূর্ণিয়া, মধুবনী, দ্বারভাঙা, পশ্চিম চম্পারণ-সহ ২০টির বেশি জেলা ঘুরবেন রাহুল। সঙ্গে থাকবেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবও। কর্মসূচি চলাকালীন ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন কংগ্রেস সাংসদ। রাহুল জানিয়েছেন, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিই নয়, এটি গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার আন্দোলন। এই ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’য় শামিল হওয়ার জন্য জনতাকে আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ। শুধু তা-ই নয় এই যাত্রায় শামিল হয়ে নিজেদের অধিকার নিয়ে আওয়াজ তোলারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মহাগঠবন্ধন-এর শরিকি দলগুলিও রাহুলের এই যাত্রাকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছে। সাসারাম থেকে শুরু হবে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’। আরজেডি নেতা তেজস্বী বলেন, ‘‘রবিবার থেকে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু হচ্ছে। আমরা জেলায় জেলায় ঘুরব। জনসাধারণকে সচেতন করব যাতে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়।’
বিহারে এই মুহূর্তে ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ নিয়ে রাজনীতি সরগরম। এসআইআর নিয়ে দেশ জুড়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বলা ভাল, আপাতত জাতীয় রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে এই প্রক্রিয়াকে ঘিরেই। বিরোধী দলগুলি ঐক্যবদ্ধ ভাবে কমিশনের ভূমিকা, এসআইআর-এর প্রক্রিয়া নিয়ে সরব। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার সংখ্যা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করা হয়েছে বিরোধীদের তরফে। তার মধ্যে গত কয়েক দিন ধরেই রাহুল ভোট চুরির অভিযোগ তুলছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিহারে রাহুলের এই ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, গত ৭ অগস্ট রাহুল অভিযোগ তোলেন বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোটে কারচুপি করেছে নির্বাচন কমিশন। শুধু তা-ই নয়, আরও দাবি করেন, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় কংগ্রেসের ফলাফলের প্রসঙ্গও টেনে এনেছিলেন রাহুল। রাহুল যখন ভোট চুরির অভিযোগ নিয়ে সরব, পাল্টা জবাব দেয় নির্বাচন কমিশনও। রাহুলকে হলফনামা দিয়ে প্রমাণ দিতে বলা হয় তাঁর অভিযোগের সাপেক্ষে।