বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে দশটি বিরোধী দল ও বিভিন্ন সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা করেছে, বৃহস্পতিবার তার শুনানি। তার আগে আজ রাহুল গান্ধী পটনায় বিরোধী জোটের বিক্ষোভ থেকে নির্বাচন কমিশনারদের কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনারেরা এখন যা-ই করুন না কেন, তাঁরা যে আইনের ঊর্ধ্বে নন, সে কথা যেন তাঁরা ভুলে না যান।’’ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার বিজেপি-আরএসএসের মতো কথা বলছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন রাহুল।
আজ শ্রমিক সংগঠনগুলির ধর্মঘটের সঙ্গে বিহারে কংগ্রেস, আরজেডি ও বামদলগুলির জোট ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে ‘সম্পূর্ণ বিহার বন্ধ’-এর ডাক দিয়েছিল। সেই সূত্রেই পটনায় কমিশনের দফতরের সামনে ‘চাক্কা জ্যাম’ করতে নামেন রাহুল, তেজস্বী যাদব। সঙ্গে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, এম এ বেবি, ডি রাজার মতো বাম নেতারাও ছিলেন। রাহুল অভিযোগ তোলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের ভোটের মতো বিহারের ভোটেও চুরির চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের নেতারা নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে এসে বলেছেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিজেপি-আরএসএসের মতো কথা বলছেন। উনি ভুলে গিয়েছেন যে, উনি রাজনৈতিক দলের লোক নন। ওঁর কাজ সংবিধানরক্ষা করা।’’
এর পরেই জ্ঞানেশ কুমারকে কার্যত সতর্ক করে রাহুল বলেন, ‘‘আপনার যা করার করুন। কিন্তু পরে আইন আপনার উপরে বর্তাবে। ভুলবেন না, আপনি যতই বড় হোন, আইন আপনাকে ছাড়বে না।’’ তেজস্বী নির্বাচন কমিশনকে ‘গোদি কমিশন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা বিহারে বিজেপি ও নীতীশ কুমারের গোদি আয়োগের দাদাগিরি সহ্য করব না। এখানে ক্রান্তি হবে।’’
বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, সুপ্রিম কোর্টে মামলার আগে বিরোধী শিবির শীর্ষ আদালত ও নির্বাচন কমিশনের উপরে চাপ তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে গরিব, দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, পরিযায়ীদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। আজ কমিশন বার্তা দিয়েছে, সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ মেনেই ভোটার তালিকা সংশোধন করা হচ্ছে। গণতন্ত্র মজবুত করতে নিখুঁত ভোটার তালিকা জরুরি। ভোটারদের মধ্যে বিলি করা ফর্মের ৫৭% জমা পড়ে গিয়েছে। জ্ঞানেশ কুমার বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন সব সময় ভোটারদের সঙ্গে ছিল, আছেও থাকবে।’’
সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে মঙ্গলবারই দলের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, বিবেক তাঙ্খা, মণীশ তিওয়ারি, সলমন খুরশিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাহুল আজ বলেন, মহারাষ্ট্রে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের মধ্যে সাত মাসে এক কোটি ভোটার যোগ হয়েছিল। যে কেন্দ্রে বিপুল ভোটার বেড়েছে, সেখানেই বিজেপি ঠিক ততটা ভোটে জিতেছে। এখন বিহার মডেলে ভোটার ছাঁটাই হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাহুল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)