Advertisement
E-Paper

রাফালের সঙ্গে অস্ত্র নোটবন্দি

কৈলাস-মানসরোবর যাত্রার আগে রাহুল আজ হঠাৎই সাংবাদিক বৈঠকে করতে চলে আসেন দিল্লিতে কংগ্রেসের দফতরে। প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধোনা করে বললেন, নোটবন্দি কোনও ‘জুমলা’ নয়, এটা দুর্নীতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০০
রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

অরুণ জেটলিকে আসরে নামিয়েও রাহুল গাঁধীর রাফাল-ধাক্কা সামাল দিতে পারছেন না নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি সরকারকে দম ফেলার সময় না-দিয়ে এ বার নোটবন্দির ‘দুর্নীতি’ নিয়ে তেড়েফুঁড়ে নেমে পড়লেন রাহুল।

কৈলাস-মানসরোবর যাত্রার আগে রাহুল আজ হঠাৎই সাংবাদিক বৈঠকে করতে চলে আসেন দিল্লিতে কংগ্রেসের দফতরে। প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধোনা করে বললেন, নোটবন্দি কোনও ‘জুমলা’ নয়, এটা দুর্নীতি। এটা প্রধানমন্ত্রীর কোনও ‘ভুল’ ছিল না। তিনি জেনেবুঝেই বেকার যুবক, ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের শেষ করে তাঁদের টাকা ছিনিয়ে অনাদায়ী ঋণে ডুবে থাকা ১৫-২০ জন বন্ধু শিল্পপতির পকেটে দিয়েছেন। যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর বিপণনের টাকা জোগান। আর সে কারণেই বাতিল নোটের সবটাই ফেরত এসেছে।

গত কালই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ২০১৬-র নভেম্বরে বাতিল হওয়া ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ৯৯.৩ শতাংশই ফিরে এসেছে তাদের ঘরে। নোটবন্দির ‘সাফল্য’ নিয়ে গত বাইশ মাস ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বীকারোক্তির পরে তা আরও জোরদার হয়।

তার পরেও অবশ্য খানিক আমতা আমতা করে নোটবন্দির সাফল্য দাবি করেছিলেন কেন্দ্রের অর্থ বিষয়ক সচিব। আজ মুখ খোলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নিজে। নোটবন্দির সময় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ পাশ কাটিয়ে নতুন যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করেন তিনি। দাবি করেন, কালো টাকাকে অবৈধ করে দেওয়াই নোট বাতিলের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল না। প্রায় সব নোট ফিরে এলেও কালো টাকার মালিকদের চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে তাঁর দাবি।

জেটলির এই ঢালে অবশ্য রাহুলের আক্রমণ ভোঁতা হচ্ছে না। আজ সকালে তাঁর নির্দেশে রাফাল প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও অভিযান করে যুব কংগ্রেস। যদিও মোদী তখন ছিলেন নেপালে। এর পর দলের কোর কমিটির বৈঠকে রাহুল স্থির করেন, রাফাল ও নোটবন্দিকে একসূত্রে বেঁধে ‘জোড়া দুর্নীতি’ নিয়ে আক্রমণ করবেন মোদীকে। কারণ, রাফাল নিয়ে অন্যান্য বিরোধী দল সে ভাবে সরব না হলেও নোটবন্দির ‘দুর্নীতি’ নিয়ে তারা মুখ খুলবে।

সেই কৌশলের অঙ্গ হিসেবেই রাফালে মোদী ও অনিল অম্বানীর ‘ডিল’ নিয়ে আক্রমণের পাশাপাশি আজ রাহুল বলেন, নোটবন্দির উদ্দেশ্যই ছিল আমজনতার টাকা লুঠে বন্ধু শিল্পপতিদের পকেট ভরা, তাঁদের কালো টাকা সাদা করা।

গত কালই রাফাল নিয়ে অমিত শাহ ও জেটলি আক্রমণ করেছিলেন রাহুলকে। তার জবাব দিতে আজ মোদীর সঙ্গে ফ্রান্সের যৌথ বিবৃতি হাতে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আসেন কংগ্রেস সভাপতি। পড়ে শোনান, ইউপিএ আমলের সমান বিমানই কিনেছেন মোদী। তবু দাম তিন গুণ বেশি। জেটলির দাবি, রাহুল বোঝেননি রাফাল সস্তায় কেনা হয়েছে। রাহুলের জবাব, সরকার সেটা যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে বোঝাক। নাকি জেটলি ঘাবড়ে গিয়ে মোদীকে জিজ্ঞাসাই করে উঠতে পারেননি?

এ দিন তাচ্ছিল্যের সুরে রাহুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে আমরা সিরিয়াসলি নিই না। শুধু মিথ্যা বলেন। কিন্তু মিথ্যা বললেই ধরব। নোটবন্দির দুর্নীতির প্রমাণ ধীরে ধীরে আসবে। ইতিমধ্যেই অমিত শাহের সমবায় ব্যাঙ্কে বাতিল নোট জমা, নোটবন্দির ঠিক আগে জেলায় জেলায় বিজেপির জমি-বাড়ি কেনার তথ্য সামনে এসেছে। আমাদের সময় ২০ পয়েন্ট প্রোগ্রাম হত, এখন মোদীর এক পয়েন্ট লক্ষ্য।’’ অনিল অম্বানীকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘যত খুশি আইনি নোটিস পাঠান, তাতে সত্য বদলাবে না।’’

কংগ্রেস সভাপতির এই আক্রমণ সামলাতে বিজেপি মুখপাত্রের মন্তব্য, ‘‘এ তো তোতা পাখির মতো একই কথা বলে চলেছেন রাহুল গাঁধী। এটা কি এত দিনের দুর্নীতির টাকা নোটবন্দিতে গায়েব হওয়ার যন্ত্রণা?’’

Rahul Gandhi demonetization Rafale Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy