ঝড়ে ভেঙে পড়েছে গাছ। কাছাড়ের গুমড়া ফাঁড়িতে। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র
লাগাতার ঝড়বৃষ্টিতে বরাক উপত্যকার জনজীবন ছন্দহীন হয়ে পড়ছে।
বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি ভেঙেছে। অনেক ঘরের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। বোরো ধান জলে-মাটিতে একাকার। এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন উপত্যকার অনেকটা এলাকাই। গাছ পড়ে কোথাও তার ছিড়ে গিয়েছে, কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি ভূপতিত। এক-দু জায়গায় ট্রান্সফর্মারও নষ্ট হয়েছে বলে বিভাগীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ধসে দু’দিন ধরে শিলচর-হাফলং সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ধস নামছে পাঁচগ্রাম রেল লাইনের উপরও। শুক্রবারের মতো গত কালও শিলচর স্টেশন থেকে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়া যায়নি। লাইন থেকে পাহাড়ি মাটি সরিয়ে আলিপুরদুয়ারগামী বিশেষ ট্রেনটিকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ছাড়া হয়। যাত্রীরা উৎকণ্ঠায়— কখন মাঝপথে আটকে পড়তে হয়! তবে আজ শিলচর-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস সময়মতো ছেড়ে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িও। এসপি রাজবীর সিংহ জানিয়েছেন, জিরিঘাট ফাঁড়ির মুখে বড়সড় গাছ ভেঙে পড়লে প্রচুর লোকসান হয়। বিদ্যুতের খুঁটি আছড়ে পড়ায় গোটা এলাকা কাল রাত থেকে অন্ধকারে। গুমড়া ফাঁড়িও ঝড়ের দাপটে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। তবে কোথাও কোনও পুলিশকর্মী আহত হননি।
শিলচর শহরে ঝড় তেমন দাপট দেখাতে পারেনি। এখানে ভোগান্তির কারণ টানা বৃষ্টি। গলি-উপগলিতে জল জমে বেরনো মুশকিল হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে ধলাই, কাটিগড়া উধারবন্দ এলাকা থেকেও। অভিযোগ উঠেছে, ভোটপর্ব শেষ হওয়ায় রাজনৈতিক দল বা নেতাদের এখন আর দুঃস্থদের পাশে দেখা যাচ্ছে না। দু-এক জন প্রার্থী ছাড়া কেউ বিপন্ন এলাকাবাসীর খবর নেননি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণের দাবি উঠেছে।
পাহাড় ধসে শিলচর-হাফলং ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হলেও, এ দিন ফের ওই সড়কে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। একটানা বৃষ্টিতে গত কাল বিকেলে শিলচর-হাফলং বান্দরখালের কাছে দূরবীণটিলায় ৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমেছিল। রাতেই ধস সরানোর কাজ শেষ হয়। এ দিন সকাল থেকে ওই সড়কে ছোট গাড়ি চলাচল শুরু হয়। ঝড়বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন। হাফলং শহরে এ দিন বিকেলে বিদ্যুৎ পরিষেবা ফের চালু হয়। তবে মাইবাং, হারাঙ্গাজাও, ডিটেকছড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, সেখানে পরিষেবা শুরু করতে ৪-৫ দিন সময় লাগবে। এ দিন সকাল থেকে ডিমা হাসাও জেলায় বিএসএনএল পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy