Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘর মোছার নিদান মেয়েদের, বিতর্ক

কিন্তু এর পরেই বলা হয়েছে, ‘‘মহিলারা মশলা পেষাই, ঘরদোর মোছা এবং কলসিতে জল ভরা— এমন ধরনের ঘরের কাজ আরও বেশি করে করুন। তাতে শরীর সুস্থ থাকবে।’’ আর এমন রচনা প্রকাশ হতেই আসরে নেমেছেন অধিকার-রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
জয়পুর শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৯
Share: Save:

প্রশ্ন ছিল, কী কী উপায়ে শরীর সুস্থ রাখবেন মহিলারা।

তার উত্তরে বলা হয়েছে, চাক্কিতে শস্য বা মশলা পেষাই করে, জলের কলসি ভরে এবং ঘর মুছে শরীর সুস্থ রাখতে পারবেন মহিলারা।

শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে মহিলাদের জন্য এমনই সব সরল উপায় বাতলে দিয়েছে ‘শিবিরা’ নামে রাজস্থানের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি পত্রিকা! যেখানে দেশ জুড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাধের প্রকল্প ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’-এর প্রচার চালানো হচ্ছে, সেখানে বিজেপি শাসিত রাজস্থানের শিক্ষা দফতর থেকে প্রকাশিত ওই পত্রিকায় মহিলাদের সুস্থ থাকার এমন উপায় ঘিরেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

সূত্রের খবর, স্কুলশিক্ষকদের জন্য প্রতি মাসেই ‘শিবিরা’ নামে ওই পত্রিকাটি প্রকাশ করছে রাজস্থানের শিক্ষা দফতর। মহাপুরুষদের কথা এবং মানুষের মনে আগ্রহ জাগায় এমন সব বিষয়বস্তুর উপর রচনাও থাকে ওই পত্রিকায়।

কিন্তু গোল বেধেছে ‘শিবিরা’র নভেম্বর মাসের সংস্করণটি নিয়ে। কারণ সেখানে অন্যান্য রচনা ও প্রবন্ধের পাশাপাশিই ছাপা হয়েছে সুস্থ থাকার ১৪টি উপায়ও। ‘পেপসি’ বা ‘কোকাকোলা’র মতো ঠান্ডা পানীয়ের নাম করেই তা পান করতে বারণ করা হয়েছে। এবং অ্যালকোহলও সেবন করতে নিষেধ করা হয়েছে সেই সুস্থ থাকতে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ‘‘সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ভোরে উঠে প্রাতর্ভ্রমণ, সাইকেল চালানো, ঘোড়ায় চ়়ড়া, সাঁতার কাটা এবং অন্যান্য ব্যায়াম করা উচিত।’’

কিন্তু এর পরেই বলা হয়েছে, ‘‘মহিলারা মশলা পেষাই, ঘরদোর মোছা এবং কলসিতে জল ভরা— এমন ধরনের ঘরের কাজ আরও বেশি করে করুন। তাতে শরীর সুস্থ থাকবে।’’ আর এমন রচনা প্রকাশ হতেই আসরে নেমেছেন অধিকার-রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই প্রবন্ধে মহিলাদের এমন উপদেশ দিয়ে লিঙ্গবৈষম্যের বিষয়টিকেই উস্কে দেওয়া হয়েছে। রাজস্থানের পিপলস্‌ ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ-এর জাতীয় সম্পাদক কবিতা শ্রীবাস্তব এই ঘটনার কড়া নিন্দা করে বলেন, ‘‘শিক্ষা আমাদের যে জায়গাগুলি থেকে মুক্ত করে, সেখানে শিক্ষা দফতর পুরনো ধ্যানধারণা চাপিয়ে দিয়ে তার উল্টো পথেই হাঁটতে চাইছে। আর এটা খুবই লজ্জাজনক বিষয়।’’

বিতর্কের মুখে পড়ে মুখ খুলেছেন মাধ্যমিক শিক্ষার ডিরেক্টর তথা ওই পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাথমল দিদেলও। তিনি স্বীকার করেছেন, মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট করে শরীরচর্চা হিসেবে ঘরের কাজ করতে বলাটা ঠিক হয়নি। তবে তাঁর যুক্তি, ‘‘এটাই আমাদের সমাজে প্রথম থেকে চলে আসছে। ফলে লেখক এই বিষয়টিতেই প্রভাবিত হয়ে এটা লিখে ফেলেছেন। এর মধ্যে কোনও রকম লিঙ্গ বৈষম্যের উদ্দেশ্য ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE