রামমন্দির গড়তে মোহন ভাগবতের হুঁশিয়ারির পরেই এ বার মন্দির নির্মাণের দিন ক্ষণও জানিয়ে দিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এ দিন কর্নাটকের উদুপিতে সাধুসন্তদের নিয়ে আয়োজিত ধর্মসংসদে পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতা সুরেন্দ্র জৈনের ঘোষণা, ‘‘আগামী বছরের ১৮ অক্টোবর থেকে অযোধ্যায় রামমন্দির গড়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে। আর পরের ধর্মসংসদ অযোধ্যাতেই বসবে।’’
অযোধ্যায় বিতর্কিত জমি নিয়ে ফয়সালা করতে আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। নিয়মিত ভাবে তা চলার কথা। তবে এর আগেই আদালতের বাইরে সমাধানের রাস্তা খুঁজতে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছেন ধর্মগুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। এই চেষ্টা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি ঠিকই। কিন্তু গুজরাতের ভোটের আগে রামমন্দির প্রসঙ্গ ফের হাওয়ায় উড়তেই সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অযোধ্যার ওই জমিতে রামমন্দিরই গড়ে উঠবে। কর্নাটকে ধর্মসংসদের শুরুতেই তিনি জানিয়ে দেন, রামমন্দির নির্মাণের জন্য অযোধ্যায় যে পাথরগুলি নিয়ে কাজ হচ্ছে, সেগুলি দিয়েই মন্দির গড়া হবে। ভাগবতের মতে, মন্দির নির্মাণ হল একটা বিশ্বাসের ব্যাপার। এটা কোনও ভাবেই একে বদল করা সম্ভব নয়।
ভাগবতের অবস্থান সঙ্ঘের শাখা সংগঠনগুলিকে যে কট্টর অবস্থানের দিকে ঠেলে দিয়েছে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা ভিএইচপি-র আন্তর্জাতিক যুগ্ম সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈনের ঘোষণাতেই তা স্পষ্ট। অনেকেই মনে করছেন, গুজরাতের ভোটের আগে বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখে মোদী সরকার তথা গুজরাত সরকারের উদ্দেশে যে ভাবে তোপ দাগছেন রাহুল গাঁধী, যে ভাবে হার্দিক পটেল, জিগ্নেশ মেবাণীর মতো যুব নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আক্রমণ করে চলেছেন, তাতে বিজেপির উপর চাপ বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সব অপ্রিয় প্রশ্ন থেকে মুখ ঘোরাতে মেরুরকণের দিকেই এগোচ্ছিল বিজেপি। ধর্মসংসদের বার্তাও সেই মেরুকরণের কথা মাথায় রেখেই। কারণ, গত তিন দিন ধরে এই মঞ্চ থেকে শুধু মন্দির নির্মাণ নিয়েই আওয়াজ তোলা হয়নি— গো হত্যা বন্ধ, দেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধি নিয়েও বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে। আজ রামমন্দির গড়া নিয়ে পরিষদের ঘোষণা সেই সুরকেই আরও চড়িয়ে দিল।