শিক্ষা: হেলমেটহীন সওয়ারিদের ছবি দেখাচ্ছে পুলিশ। জামশেদপুরে। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী।
বাজারের থলে নিয়ে বেরিয়ে ফিরছেন না জামশেদপুরের সাকচির বাসিন্দা দীনেশ তিওয়ারি। ঘণ্টা দুই কেটে যাওয়ার পরেও বাড়ি না ফেরায় দুশ্চিন্তায় দীনেশবাবুর স্ত্রী। স্কুটার নিয়ে বেরিয়েছেন। কোনও দুর্ঘটনা ঘটল না তো? স্বামীর মোবাইলে ফোন করে জানতে পারলেন, তিনি সিনেমা দেখছেন। বাজার করতে বেরিয়ে সিনেমা দেখা! জগ্গা জাসুস নাকি মম্? দীনেশবাবুর স্ত্রীর মেজাজ যখন সপ্তমে, তখনই জানতে পারলেন তাঁর স্বামী বাধ্য হয়েই সিনেমা দেখছেন। সিনেমা দেখছেন সাকচি থানায় বসে।
হেলমেটহীন মোটরবাইক, স্কুটার চালকদের জরিমানার পাশাপাশি এখন এই অভিনব শাস্তি দিচ্ছে জামশেদপুরের ট্রাফিক পুলিশ। ডিএসপি (ট্রাফিক) বিবেকানন্দ ঠাকুর বলেন, ‘‘শহরে হেলমেটহীন বাইক বা স্কুটার চালক দেখলেই তাঁদের ধরা হচ্ছে। থানায় নিয়ে গিয়ে টানা দু’ঘণ্টা ধরে ট্রাফিক সচেতনতা সংক্রান্ত একাধিক তথ্যচিত্র দেখতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারপর জরিমানা দিয়ে তাঁদের ছাড় মিলছে।’’
সাকচি থানায় ২০০ জনকে বসিয়ে এই সিনেমা দেখানো যাতে যায়, তার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলছে এই সিনেমা। যখন কেউ ঢুকছেন, তাঁর নাম ও ঢোকার সময় নোট করে রাখছেন কর্তব্যরত পুলিশ। সিনেমা দেখা হয়ে গিয়েছে বলে আগেভাগে কেউ বেরিয়ে যাবেন, তার উপায় নেই।
সাকচির মোড়ে সকাল দশটা নাগাদ পুলিশ পাকড়ালেন হেলমেটহীন কলেজ-ছাত্র অনিমেষ ঝা-কে। কলেজে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস আছে বলেও ছাড় মিলল না তাঁর। পুলিশ জানাল, সিনেমা দেখে, ফাইন দিয়ে তারপর কলেজে যাও। পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন টাটার এক কর্মী। সিএল নষ্ট হবে বলে বহু কাঁদুনি গেয়েও ছাড় মিলল না।
বাধ্য হয়ে দেখলেও দু’ঘণ্টার একাধিক তথ্যচিত্র থেকে যে অনেক শিক্ষা পেলেন, তা স্বীকার করছেন অনেকেই। তাঁরা এর আগেও এই ধরনের তথ্যচিত্র টিভিতে দেখেছেন। কিন্তু নজর করেননি সে ভাবে। যেমন হেলমেটহীন মোটরবাইক চালক সোহন সিংহ। থানায় বসে সিনেমা দেখে তিনি বললেন, ‘‘কত ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তা দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত লাগছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy