কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। সেই নির্যাতিতাকে উদ্ধারের পর অভিযুক্তের বাড়িতেই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করল স্থানীয় শিশুকল্যাণ কমিটি। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে অভিযুক্ত যুবক সেই কিশোরীকে আবার ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। ধর্ষণের অভিযোগে আবার সেই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় শিশুকল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান, কয়েক জন আধিকারিক এবং সদস্য-সহ মোট দশ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের পান্নার। সেখানকার ছতরপুর থানা এলাকায় এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৬ জানুয়ারি স্কুল থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল কিশোরী। স্থানীয় থানায় তার পরিবার একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। এক মাস পর অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি কিশোরীকে হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে দেখা যায়। কিশোরীকে অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগে যুবককে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, কিশোরীকে উদ্ধারের পর তাকে পান্না জেলার শিশুকল্যাণ কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাকে প্রথমে পান্নার ওয়ান স্টপ সেন্টারে (ওএসসি) রাখা হয়। অভিযোগ, কোনও রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে শিশুকল্যাণ কমিটি কিশোরীকে অভিযুক্তের বৌদির বাড়িতে পাঠায়। ঘটনাচক্রে, অভিযুক্তের বৌদি আবার কিশোরীর তুতো দিদি। সেখানেই থাকছিল কিশোরী। ইতিমধ্যে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পান অভিযুক্ত। বাড়িতে ফিরে কিশোরীকে আবার ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।
কী ভাবে কিশোরীকে অভিযুক্তের বাড়িতে পাঠানো হল, তা নিয়েই হুলস্থুল পড়ে যায়। পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কিশোরীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে শিশুকল্যাণ কমিটি। মহিলা এবং শিশুকল্যাণ দফতরের কাছ থেকে কোনও পরামর্শও নেওয়া হয়নি বলে তদন্তে উঠে এসেছে। কিশোরীর পরিবার জেলাশাসকের দ্বারস্থ হন। জেলাশাসক তখন শিশুকল্যাণ কমিটিকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দেন। অভিযোগ, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে কিশোরীকে আবার ওয়ান স্টপ সেন্টারে গত এপ্রিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে কাউন্সেলিংয়ের সময় ফের ধর্ষণের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। তার পরই অভিযুক্তকে আবার গ্রেফতার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নবীন দুবে জানিয়েছেন, যাঁরা কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্তের বাড়িতে পাঠিয়েছেন এবং যাঁরা এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, সকলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম অফিসার এবং ওয়ান স্টপ সেন্টারের এক কর্মী এই মামলাটিকে গোপন করার চেষ্টা করেছেন।