নন্দীঘোষ, তালধ্বজ, দর্পদলন— তিনটি রথের গন্তব্য ছিল পুরীর গুণ্ডিচা মন্দির। জগন্নাথ মন্দির থেকে সেই মন্দিরের দূরত্ব মেরেকেটে তিন কিলোমিটার। কিন্তু শুক্রবার সকালে মন্দির থেকে রথ বেরিয়েও পৌঁছোতে পারেনি গন্তব্যে। সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটেই থেমে গিয়েছিল যাত্রা। সারা রাত পুরীর রাস্তায় রাখা ছিল তিনটি রথ। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আবার রথের রশিতে টান দিয়েছেন ভক্তেরা। ভিড় নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন ছিলেন রক্ষী। কেন শুক্রবার, রথযাত্রার দিন গন্তব্যে পৌঁছোতে পারল না জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার রথ? প্রশাসন এবং মন্দিরের একটি সূত্র বলছে, ভিড় অন্যতম কারণ। তবে তা ছাড়াও অন্য কিছু সমস্যা রয়েছে।
শুক্রবার পুরীর মন্দিরের সামনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছেন রক্ষীরা। ছবি: পিটিআই।
রীতি মেনে দাদা বলভদ্রের রথ তালধ্বজ চলে সকলের আগে। তার পরে বোন সুভদ্রার দর্পদলন। সকলের শেষে চলে জগন্নাথের নন্দীঘোষ। লক্ষ লক্ষ মানুষ দড়ি দিয়ে সেই রথ টেনে নিয়ে যান। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, গ্র্যান্ড রোডে (বড় দণ্ড) তালধ্বজ রথটি যখন বাঁক ঘুরছিল, সে সময়ে বিপত্তি হয়। কাঠের তৈরি তালধ্বজ রথটি এতটাই বড়, যে তা বাঁক ঘুরতে পারছিল না। এর ফলে দীর্ঘ ক্ষণ থেমে থাকে শোভাযাত্রা। শুক্রবার বলভদ্রের রথ তালধ্বজ বড় দণ্ডের উপরে বলগণ্ডি পর্যন্ত যেতে পারে। সুভদ্রার রথ দর্পদলন মাঝপথে মার্কেট চক অবধি পৌঁছোয়।
স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তারক্ষীদের একটি সূত্র বলছে, রথ সংলগ্ন ঘেরাটোপে বহু মানুষ ঢুকে পড়েন। সে কারণে অবাধে চলতে পারেনি রথ। বার বার বাধা পেয়েছে যাত্রা। নিজেদের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করতে পারেননি সেবায়েত এবং রক্ষীরা। শুক্রবারের ঘটনায় বিরোধী বিজেডি (বিজু জনতা দল) আঙুল তুলেছে বিজেপি সরকারের দিকে। যদিও সরকার এবং প্রশাসনের একটি অংশের দাবি, এ বছর রথে পুরীতে প্রত্যাশার বেশি ভক্ত সমাগম হয়েছে। খাতায়-কলমে পুরীতে শুক্রবার লোক হয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।
পুরীর গ্র্যান্ড রোডে ভক্তদের ভিড়। ছবি: পিটিআই।
শুক্রবার ঠেলিঠেলিতে পদপিষ্ট বা ভিড়ে দমবন্ধ হয়ে অন্তত ৬০০ জন ভক্ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত কারও প্রাণহানির খবর মেলেনি। তবে অসুস্থদের মধ্যে অন্তত ৪০ জন গুরুতর আহত।