কারও ০, কারও ০০, কারও আবার ০০০! বিহারের খসড়া ভোটার তালিকায় প্রায় তিন লক্ষ ভোটারের বাড়ির ঠিকানা এমনই। ‘দ্য নিউজ় মিনিট’-এর একটি প্রতিবেদনে এমনই দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে সে রাজ্যের রাজনীতিতে। প্রতিবেদনে বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয় বা সিইও অফিসের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, ভুল থেকেই এই ঘটনা।
সিইও অফিসের ওই আধিকারিক বলেন, “ফর্মে অনেক ভোটারই বাড়ির নম্বর উল্লেখ করেননি। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এখনও অনেক আবেদনপত্র জমা পড়ছে। তাই অনির্ধারিত বাড়ির ঠিকানার পাশে ০ বসানো থাকছে। আমরা বিষয়টি সংশোধন করার চেষ্টা করছি।”
চলতি বছরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে সে রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (এসআইআর) চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। গত ১ অগস্ট একটি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে তারা। ওই খসড়া তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, বৈধ ভোটারদের নামও বাদ যাচ্ছে। এই নিয়ে মামলাও চলছে সুপ্রিম কোর্টে।
‘দ্য নিউজ় মিনিট’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খসড়া ভোটার তালিকা যাচাই করে দেখেছে ‘নিউজ়লন্ড্রি’। সে রাজ্যের ২৩৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের ৮৭,৮৯৮টি বুথের সাত কোটিরও বেশি ভোটারের নাম রয়েছে ওই খসড়া তালিকায়। প্রতিবেদন অনুসারে, পটনা আর মগধ অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি ভোটারের বাড়ির নম্বর ০। বিধানসভা কেন্দ্রের নিরিখে সব থেকে বেশি ০ নম্বর সম্বলিত বাড়িতে থাকেন অওরঙ্গাবাদ কেন্দ্রের ভোটারেরা (৬,৬৩৭)। তার পরেই রয়েছে ফুলওয়াড়ি (৫,৯০৫), মানের (৪,৬০২), ফারবিসগঞ্জ (৪,১৫৫), দানাপুর (৪,৬০৩), গোপালগঞ্জ (৩,৯৫৭), পটনা সাহিব (৩,৮০৬)।
অন্য দিকে, ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটি প্রতিবেদনে অনুসারে, খসড়া ভোটার তালিকায় দেখা গিয়েছে, বিহারের জামুই জেলার একটি গ্রামের ২৩০ জন ভোটার একই বাড়ির বাসিন্দা। চৌডিহা পঞ্চায়েতের আমিন গ্রামের বাসিন্দা ওই ২৩০ জনের প্রত্যেকেই কমিশনের কাছে জমা দেওয়া ফর্মে জানিয়েছেন, তাঁরা তিন নম্বর ওয়ার্ডের তিন নম্বর বাড়ির বাসিন্দা। যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা না-করে নিজেদের মতো ফর্ম পূরণ করাতেই এই বিভ্রাট।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ তুলেছিলেন রাহুল। লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকে ‘ভোট চুরির উদাহরণ’ দিতে গিয়ে রাহুল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভায় ভয়ঙ্কর চুরি হয়েছে। সেখানে এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে।’’ তিনি জানান, বেঙ্গালুরুর ওই লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস পেয়েছিল ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৬ লক্ষ ৫৮ হাজার ভোট। হারজিতের ব্যবধান ছিল ৩২ হাজারের সামান্য বেশি। আর শুধু মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনে দুই দলের তফাত ছিল ১ লক্ষ ১৪ হাজারের বেশি ভোট। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে ওই এলাকায় ১০ ফুট বাই ১৫ ফুটের একচিলতে একটি ঘরে ৮০ জন ভোটারের নাম নথিভুক্তির তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলে ‘ইন্ডিয়া টুডে’ প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়।