ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে ত্রিপুরায় বাম ও কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। নিজস্ব চিত্র।
ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসে ত্রিপুরায় ‘আক্রান্ত’ হল বাম এবং কংগ্রেস সাংসদদের প্রতিনিধিদলই।
ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতা করে লড়েছিল বাম ও কংগ্রেস। ভোটের পরেও তারা একসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে। দু’পক্ষের মোট ৮ জন সাংসদ তিনটি দলে ভাগ হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখতে বেরিয়েছিলেন। একটি দলে বাম সাংসদ এলামারম করিম এবং কংগ্রেসের আব্দুল খালিকের সঙ্গে ছিলেন ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ। বিশালগড় মহকুমায় তাঁরা আক্রমণের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, এই হামলার জেরে কাল প্রতিনিধিদলের নির্ধারিত যাবতীয় সফর স্থগিত করা হয়েছে। হামলায় শাসক দলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও তাদের মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যের দাবি, বিজেপিকে বদনাম করতে এই ‘চক্রান্ত’ করা হয়েছে। পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সংসদীয় প্রতিনিধিদলের তরফে কাল সকালে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন জানানো হয়েছে। তবে আজ রাত ১০টা পর্যন্ত রাজভবন থেকে কোনও জবাব আসেনি। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কাল আগরতলায় কথা বলার কথা প্রতিনিধিদের। ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস, অশান্তির অভিযোগ আসছে। বিরোধীরা যা নিয়ে সরব। পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতেই বাম ও কংগ্রেসের সংসদীয় প্রতিনিধিদল এসেছে। এই দলে সিপিএমের সাংসদ পি আর নটরাজন, এলামারম করিম, বিকাশ ভট্টাচার্য, এ এ রহিম, সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বমের পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফে সাংসদ গৌরব গগৈ, রঞ্জিতা রঞ্জন এবং আব্দুল খালিক রয়েছেন। প্রথমে প্রতিনিধি দলটি রাজ্যের বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্য অতিথিশালায় বৈঠকে বসে। তার পরে রাজ্যের নেতাদের নিয়ে তিনটি দলে ভাগ হয়ে সন্ত্রাস-কবলিত জায়গাগুলি ঘুরে দেখেন তাঁরা।
বাম ও কংগ্রেসের অভিযোগ, আজ সন্ধ্যায় সিপাহিজলা জেলার বিশালগড় মহকুমার নেহাল চন্দ্র নগর এলাকায় সন্ত্রাসের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে গিয়ে করিম, খালিকদের দলটি হামলার মুখে পড়ে। ত্রিপুরায় এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক অজয় কুমারও সেখানে ছিলেন। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। বিবৃতিতে তাদের অভিযোগ, সাংসদদের প্রতিনিধিদলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছনো মাত্র ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়ে ‘বিজেপি-আশ্রিত গুন্ডারা’ তাঁদের আক্রমণ করে। কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে তারা। সিপিএমের বক্তব্য, বিজেপি-শাসিত রাজ্যে এখন সাংসদেরা পর্যন্ত নিরাপদ নন। কংগ্রেস নেতা অজয় বলেন, ‘‘সব দলের আক্রান্তদের খোঁজ নিতেই আমরা গিয়েছিলাম। দেশে বিভিন্ন সময়ে সাংসদদের প্রতিনিধিদল সফর করে। কিন্তু ত্রিপুরার মতো এমন হামলার মুখে পড়তে হয় না তাঁদের।’’ নেতাদের বাঁচাতে পুলিশের কোনও ভূমিকা ছিল না বলেও অভিযোগ করেন অজয়।
সিপিএমের বিশালগড় মহকুমা সম্পাদক পার্থপ্রতিম মজুমদারের অভিযোগ, সাংসদদের উপরে হামলার ঘটনার পরেও ‘বিজেপির দুষ্কৃতীরা’ স্থানীয় সিপিএম নেত্রী অঞ্জলি দাসের ছেলে সজল দাস, রাকেশ দাস-সহ অনেকের বাড়িতে ভাঙচুর করে ও আগুন লাগায়। রাজ্য পুলিশ যদিও বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, সাংসদদের সঙ্গে থাকা পুলিশই তাঁদের বাঁচিয়েছে। এক অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy