Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Uttarkashi Tunnel Collapse

উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে ‘বিশেষ যন্ত্র’, কী ভাবে বেরোবেন ৪০ জন?

সুড়ঙ্গের মুখে ধসে যাওয়া পাথর সরে যাওয়ার পর উদ্ধারকর্মীরা সুড়ঙ্গের মধ্য ৩ ফুটেরও কম) একটি পাইপ ঢোকানোর পরিকল্পনা করেছেন। যার মধ্যে দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন শ্রমিকেরা।

Rescue team inserting 3 feet pipe in Uttarkashi Tunnel to rescue workers

উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
দেহরাদূন শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২৭
Share: Save:

পার হয়ে গিয়েছে ১২০ ঘণ্টা। এখনও উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে ৪০ জন শ্রমিক। তবে তাঁদের আর ১২-১৫ ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার করা যেতে পারে বলে আশাবাদী জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রধান অতুল কারওয়াল জানিয়েছেন, শ্রমিকদের উদ্ধার করতে একটি বিশেষ যন্ত্র ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে। ভাঙা সুড়ঙ্গে ধসে যাওয়া পাথরে ছিদ্র করে তিন ফুটেরও কম দৈর্ঘ্যের একটি পাইপ ঢুকিয়ে শ্রমিকদের বার করে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন ।

কারওয়াল জানিয়েছেন, ‘আমেরিকান অগার’ নামে ওই খননযন্ত্র অনায়াসেই ৭০ মিটার পাথর কেটে ফেলতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা মনে করছেন, মঙ্গলবার রাতে সুড়ঙ্গ এলাকায় নতুন করে যে ধস নেমেছে, আগামী ১২-১৫ ঘণ্টার মধ্যে এই যন্ত্র তা সরিয়ে ফেলতে পারবে। খননযন্ত্রটি ঘণ্টায় ৫ মিটারেরও বেশি পাথর কাটতে পারবে বলেও মনে করছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা।

সুড়ঙ্গের মুখে ধসে যাওয়া পাথর সরে যাওয়ার পর উদ্ধারকর্মীরা সুড়ঙ্গের মধ্য ৮০ সেমি (৩ ফুটেরও কম) একটি পাইপ ঢোকানোর পরিকল্পনা করেছেন। যার মধ্যে দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন আটকে থাকা শ্রমিকেরা। বেরোনোর সময় কেউ আহত হলে তাঁদের স্ট্রেচার দিয়ে বার করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রধান।

এই প্রসঙ্গে কারওয়াল সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’কে বলেছেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমেরিকান অগার যন্ত্রটি কাজ শুরু করেছে। পাইপের এক দিকের মুখ সুড়ঙ্গে ঢোকানো হয়েছে। দ্বিতীয় অংশটি ঢালাই করা হচ্ছে। প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিটার গতিতে পাথর সরানো গেলে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টার মধ্যে শ্রমিকদের রক্ষা করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’’ কারওয়াল এ-ও জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গে খননকাজ চালানোর সময় বাধার মুখেও পড়তে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের। মাঝেমধ্যেই বেশ কিছু শক্ত পাথরে খননযন্ত্র আটকে যাচ্ছে। এর মধ্যে যদি নতুন করে পাথর ধসে পড়ে, তা হলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করে আনতে তাইল্যান্ডের একটি সংস্থাকেও ডেকে পাঠিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ২০১৮ সালের জুন মাসে তাইল্যান্ডের একটি গুহা বন্যার জলে ভেসে যাওয়ায় আটকে পড়েন ১২ জন খুদে ফুটবলার এবং তাদের কোচ। অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাদের উদ্ধার করে এনে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয় তাইল্যান্ডের ওই উদ্ধারকারী সংস্থা। এ বার সেই সংস্থার অভিজ্ঞতাকেই উত্তরাখণ্ডে কাজে লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবারের মধ্যেই উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে নতুন করে ধস নামায় তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। ১৬০ জন উদ্ধারকারী উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। রয়েছেন জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ইন্দো টিবেটান পুলিশ এবং বর্ডার রোডওয়েজ়ের বাহিনী। ধসে যাওয়া সুড়ঙ্গে আটকে আছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন শ্রমিক। হুগলির বাসিন্দা জয়দেব প্রামাণিক, সৌভিক পাখিরা এবং কোচবিহারের মনির তালুকদারের পরিবারের ঘুম উড়েছে। উৎকণ্ঠার প্রহর গুনছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, রবিবার সকালে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে। এর জেরেই ওই সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে পড়েন ৪০ জন শ্রমিক। সেই ঘটনার ১২০ ঘণ্টা পেরিয়েছে। তবে তাঁদের সুস্থ রাখতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছেন না উদ্ধারকারীরা। সুড়ঙ্গপথে খাবারদাবার, ওষুধপত্র-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিকের মনোবল অটুট রাখতে নিয়মিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখা হচ্ছে। এত কিছুর পরেও উদ্ধারকাজের প্রক্রিয়া ক্রমশ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ওই শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ক্রমশ সংশয় তৈরি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uttarkashi Tunnel Collapse Uttarakhand rescue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE