বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয়কুমার সিনহার নামে দু’টি ভোটার কার্ড (এপিক নম্বর) রয়েছে! রবিবার এমনটাই অভিযোগ তুললেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত কিছু ছবিও পোস্ট করেছেন আরজেডি নেতা। তাঁর অভিযোগ, দুই ভিন্ন জেলায় ভিন্ন ভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার বিজয়কুমার। ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় তাঁর নাম রয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকাতেও দু’জায়গায় নাম এসেছে বিজয়কুমারের। লখিসরাই জেলার লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্র এবং পটনা জেলার বাঁকিপুর বিধানসভা কেন্দ্র— উভয় জায়গাতেই তাঁর নাম রয়েছে বলে অভিযোগ।
বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় এবং বিশেষ সংশোধন চালাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে একটি খসড়া তালিকাও প্রকাশ করেছে কমিশন। তা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। এই নিয়ে বিতর্কও দানা বেঁধেছে। এই আবহেই সোমবার সকালে সাংবাদিক বৈঠকে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুললেন তেজস্বী। বিজয়কুমারের নামে দু’টি এপিক নম্বর রয়েছে বলে দাবি করে আরজেডি নেতা বলেন, “এই (এপিক) নম্বরগুলি দু’টি পৃথক বিধানসভা কেন্দ্রে রয়েছে। দু’টি কার্ডে তাঁর বয়সও আলাদা। বাঁকিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে যে এপিক নম্বরটি রয়েছে, তাতে বয়স রয়েছে ৬০ বছর। লখিসরাইয়ে যে এপিক নম্বর রয়েছে, সেখানে তাঁর বয়স ৫৭ বছর।”
তেজস্বীর বক্তব্য, হয় দু’টি এপিক নম্বরের জন্য নথিতেই বিজয়কুমার স্বাক্ষর করেছেন, কিংবা বিশেষ এবং নিবিড় সংশোধনের গোটা প্রক্রিয়াতেই জালিয়াতি রয়েছে। বস্তুত, এর আগে তেজস্বী অভিযোগ তোলেন, বিহারের খসড়া ভোটার তালিকায় তাঁর নামই নেই। তাঁর নামই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন আরজেডি নেতা। কমিশন অবশ্য তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তেজস্বীর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। ওই সময় তেজস্বী যে ভোটার কার্ডটি দেখিয়েছিলেন, সেটিরও কোনও অস্তিত্ব নেই বলে দাবি কমিশনের। এরই মধ্যে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ নিয়ে নতুন অভিযোগ তুললেন তেজস্বী। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয়কুমারকে নিশানা করে তেজস্বী বলেন, “জালিয়াতি কে করছে, তা সাধারণ মানুষের জানা উচিত। লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রের এপিক নম্বর আইএএফ৩৯৩৯৩৩৭ এবং বাঁকিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের এপিক নম্বর এএফএস০৮৫৩৩৪১।”
আরও পড়ুন:
খসড়া ভোটার তালিকায় দু’জায়গায় নাম থাকা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই মুখ খুলেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর দাবি, অতীতে তাঁর পরিবার বাঁকিপুর বিধানসভা এলাকায় থাকত। বর্তমানে তিনি লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার হিসাবে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করিয়েছেন। বিজয়কুমার জানান, দু’জায়গায় নাম থাকার বিষয়টি নজরে আসার পরেই বাঁকিপুর থেকে নাম কাটানোর জন্য আবেদন করেছেন তিনি। বিজয়কুমারের দাবি, বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন আরজেডি নেতা।
উপমুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, গত বছরের এপ্রিলেই বাঁকিপুরের বদলে লখিসরাইয়ের ঠিকানায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি হয়নি। তার পরে বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-র সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদনপত্র জমা দেন। তাঁর দাবি, করণিক স্তরে খামতির জন্যই এটি হয়েছে। তবে তিনি শুধুমাত্র লখিসরাই বিধানসভা কেন্দ্রেই ভোট দেন বলে দাবি বিজয়কুমারের।