ঘন ঘন ভূমিধসের ভয়। সঙ্গে সাপখোপ, বিষাক্ত পোকামাক়ড়ের উৎপাত। কোনও কিছুই টলাতে পারেনি বছর চল্লিশের বিদেশিনীকে। দিনের পর দিন ধরে দুই খুদে মেয়েকে নিয়ে জনবসতি থেকে অনেক দূরে এক পরিত্যক্ত গুহায় ঘর বেঁধে থাকছিলেন তিনি। আচমকা এক দিন টহল দিতে গিয়ে তিন জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি কর্নাটকের গোকর্ণের। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে গোকর্ণের রামতীর্থ পাহাড়ের আশপাশে টহল দিচ্ছিল পুলিশের একটি দল। এমন সময়ে পাহাড়ের উপরে ঘন জঙ্গলে ঘেরা গুহা থেকে খসখস শব্দ আসতে থাকে। কৌতূহলের বশে সে দিকে এগিয়ে যান তাঁরা। এর পর গুহার ভিতর উঁকি দিতেই অবাক হয়ে যান পুলিশকর্মীরা। দেখা যায়, ভিতরে রয়েছেন এক রুশ মহিলা ও তাঁর দুই কন্যা! প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম নিনা কুটিনা। বছর ৪০-এর ওই মহিলা দিনের পর দিন ধরে তাঁর দুই মেয়ে প্রেমা (৬) এবং আমা (৪)-কে নিয়ে গুহায় ঘর বেঁধে থাকছিলেন।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে নিনা জানিয়েছেন, মূলত আধ্যাত্মিক কারণেই শহর থেকে দূরে নিরিবিলি কোনও জায়গায় থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ! সাতপাঁচ না ভেবে দুই মেয়েকে নিয়ে গোয়া থেকে সোজা চলে যান গোকর্ণে। সারা দিন ধ্যান ও প্রার্থনার সুবিধা হবে ভেবে বসবাসের জন্য গভীর জঙ্গলের ভিতর গুহাকেই বেছে নিয়েছিলেন নিনা। তবে তদন্ত বলছে অন্য কথা। নিনার পাসপোর্ট ও ভিসা দেখে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে ব্যবসায়িক ভিসায় ভারতে এসেছিলেন নিনা। ২০১৮ সালে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিনারা সেখান থেকে নেপালে চলে যান। এর পর ওই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় ভারতে ঢোকেন। সেই ভিসার সময়সীমা এত দিনে পেরিয়ে গিয়েছে। ভিসার মেয়াদ লঙ্ঘনের অভিযোগে নিনা ও তাঁর মেয়েদের নারী ও শিশু উন্নয়ন দফতরের এক আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। শীঘ্রই তিন জনকে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।