বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, সেই সব ঝাড়-ঝাপটা কাটিয়ে আবার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়। শেখ হাসিনার ভারত সফর দু’দেশের সম্পর্ককে তা আরও সমৃদ্ধ করবে।
ফাইল চিত্র।
বিশ্বজোড়া ভূকৌশলগত সংঘাতের মধ্যে প্রতিবেশী বলয়কে সংহত রাখার গুরুত্ব বেড়েছে। ঘরোয়া আলোচনায় এমনটাই বলছে সাউথ ব্লক। প্রকাশ্যে জানানো হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির গুরুত্ব। সূত্রের খবর, এই আবহে এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি। দুই প্রধানমন্ত্রীর কথা হবে অতিমারি পরবর্তী বিশ্বে সহযোগিতা নিয়েও। বৃহস্পতিবার সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকা যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, জয়শঙ্করের ঢাকা সফর হাসিনার সম্ভাব্য ভারত সফরের প্রস্তুতির জন্যও বটে।
এক দিনের ঢাকা সফরে জয়শঙ্কর বাংলাদেশের শীর্ষ আধিকারিকদের পাশাপাশি, হাসিনার সঙ্গেও বৈঠকের বৈঠক করবেন। ভারত-বাংলাদেশ চলতি দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলির সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই, ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতা নিয়ে কথা হবে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে নয়াদিল্লিতে ‘ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসাল্টেটিভ কমিটি’র বৈঠক হবে আগামী মে মাসের শেষে। এর পর জুনে গুয়াহাটিতে ‘ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ’। সেখানে পার্শ্ববৈঠকে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের মুখোমুখি বসবেন জয়শঙ্কর।
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে আয়োজিত মৈত্রী দিবসের লোগো বাছাই সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে আজ যোগ দেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তাঁর কথায়, “ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্কে সোনালি অধ্যায় চলছে। আমাদের পরিকল্পনা একে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।”
বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে গত বছর পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ যান মোদী। কূটনৈতিক প্রথা অনুযায়ী এই বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিল্লি সফরে আসার কথা। গত বছর মার্চে মোদীর বাংলাদেশ সফরের পরেই দু’দেশে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছিল। সে সময় দেশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশী দেশগুলিতে করোনার টিকা রফতানি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সাউথ ব্লক। স্বাভাবিক ভাবেই, ভারতের থেকে প্রথম টিকা পাওয়ার পর, দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষমান বাংলাদেশের মানুষের ক্ষোভের আঁচ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে লাগে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে পণ্য পাঠানোর জন্য চট্টগ্রাম জলবন্দর এবং বিমানবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ ভারতীয় পণ্যের যাত্রাপথের বেশ বড় একটা অংশে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভূমিকা থাকছে। তখন ঢাকার রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য ছিল, ভারত নিয়ে যদি বাংলাদেশের আমজনতার ক্ষোভ থাকে, তা হলে এই সংযোগ-প্রকল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। শুধু বকেয়া টিকা না দিতে পারার বিষয়টিই নয়। বাংলাদেশের আবেগকে আঘাত করা হয়েছে বলে কখনও ঘরোয়া ভাবে, কখনও প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছে ঢাকা। সিএএ-এনআরসি বিতর্কে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে সমবন্ধনীতে জোড়ার বিষয়গুলি বারবার উঠে এসেছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, সেই সব ঝাড়-ঝাপটা কাটিয়ে আবার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়। শেখ হাসিনার ভারত সফর দু’দেশের সম্পর্ককে তা আরও সমৃদ্ধ করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy