E-Paper

জুতো ছোড়ার নিন্দায় সবাই, কিন্তু তলে তলে?

রাকেশের আচরণের নিন্দা শাসক-বিরোধী সব পক্ষই করেছেন, এ কথা সত্য। প্রধান বিচারপতি গাভাই ও বিচারপতি ভুঁইয়ার বেঞ্চে আজ হাজির ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:২৬
প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই।

প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই।

এজলাসে ঢুকে তাঁর দিকে এক আইনজীবীর জুতো ছোড়ার ঘটনা নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। ঘটনার দিনই তিনি বলেছিলেন, এ সব তাঁকে বিচলিত করে না। আজ প্রকাশ্য শুনানিতে তিনি বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার পাশে বসে বলেন, “সোমবার যে ঘটনা ঘটেছে, আমরা তাতে খুবই বিস্মিত হয়েছিলাম... এটা আমাদের কাছে একটা বিস্মৃত অধ্যায়।”

প্রধান বিচারপতি ‘বিস্মৃত’ হলেও এ ঘটনার রেশ এত সহজে থামবে কি? সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা এবং হিন্দুসমাজের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেই কিন্তু এ বার দেশ জুড়ে আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন সাধু-সন্তেরা। আজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাংবাদিক সম্মেলনে নির্মোহী আখাড়া, আখাড়া পরিষদ, অখিল ভারতীয় সন্ত সমিতির সদস্যরা একযোগে সুপ্রিম কোর্টের দিকেই আঙুল তুলেছেন। সোমবার যে আইনজীবী রাকেশ কিশোর জুতো ছুড়েছিলেন, তিনিও সনাতনী ভাবাবেগের দোহাই দিয়েই তা করেছিলেন। এবং সে জন্য তাঁর কোনও আক্ষেপও নেই বলে দাবি করেছেন তিনি।

শীর্ষ কোর্টে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের এজলাসে ঢুকে তাঁর দিকে জুতো ছুড়ে রাকেশ কিশোর গত সোমবার ‘সনাতনের অপমান সহ্য করা হবে না’ বলে চিৎকার করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মামলা দায়ের করতে না চাওয়ায় তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে পুলিশ ৭১ বছর বয়সি ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়েছে। হামলাকারীর বক্তব্য ছিল, মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো মন্দির চত্বরের জীর্ণ বিষ্ণুমূর্তি পুনর্নির্মাণের আর্জি নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির একটি মন্তব্যে তিনি ক্ষুব্ধ। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন আজ হামলাকারী রাকেশ কিশোরকে বহিষ্কার করেছে। তিনি শীর্ষ আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানিয়ে বলা হয়েছে, ‘এমন নিন্দনীয়, উচ্ছৃঙ্খল ও অসংযত আচরণ এক জন ব্যবহারজীবীর পক্ষে অত্যন্ত অশোভন এবং পেশাদারি নৈতিকতা, শালীনতা আর শীর্ষ কোর্টের মর্যাদার গুরুতর লঙ্ঘন।’ ওই ঘটনা ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও কোর্টের কাজের পবিত্রতার উপর সরাসরি আক্রমণের শামিল’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া আগেই নিলম্বিত করেছে রাকেশকে।

রাকেশের আচরণের নিন্দা শাসক-বিরোধী সব পক্ষই করেছেন, এ কথা সত্য। প্রধান বিচারপতি গাভাই ও বিচারপতি ভুঁইয়ার বেঞ্চে আজ হাজির ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনিও বলেন, ঘটনাটি ‘ক্ষমার অযোগ্য’। তার পরেও এই বিষয়ে যবনিকা টানার জন্য প্রধান বিচারপতির ‘মহত্ত্ব এবং মহানুভবতা’র প্রশংসাও করেন তিনি। কিন্তু এরই পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের একটি অংশ আজ যে ভাবে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে, সেটাও অনেকাংশে বেনজির বলেই মনে করা হচ্ছে।

একাধিক বিজেপি-শাসিত রাজ্যে পাশ হওয়া ধর্মান্তরণ বিরোধী আইনের সমর্থনে আজ সরব হয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ ভারতীয় সাধু সমাজের একাংশ। ওই আইনে কেন সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগামী দিনে দেশ জুড়ে আন্দোলন করার পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে একাধিক বিজেপি-শাসিত রাজ্য (উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাত, ওড়িশা) নিজেদের রাজ্যে ধর্মান্তরণ

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Supreme Court of India Chief Justice of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy