E-Paper

নুর খান ও সারগোদা আক্রমণেই জব্দ পাক

ভারতের পক্ষে ফের বলা হয়েছে, ভারতের লড়াই ছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু লজ্জার বিষয় হল, পাকিস্তানের সেনা সন্ত্রাসবাদীদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

— প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ০৮:৩৭
Share
Save

কেবল লাহোর বা রাওয়ালপিন্ডিই নয়, করাচির মালির ক্যান্টনমেন্টে থাকা এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থায় হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। দু’পক্ষের সংঘাতে ধ্বংস হয়েছে পাকিস্তানের মিরাজ বিমানও। তবে সারগোদা বায়ুসেনা ঘাঁটির কাছে কিরানা পাহাড়ে ভারত কোনও হামলা চালায়নি বলে আজ সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট করে দিয়েছেন এয়ার মার্শাল একে ভারতী। ওই কিরানা পাহাড়ের ভিতরে তৈরি বাঙ্কারেই রয়েছে পাকিস্তানের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র,গোলাবারুদের ভান্ডার।

ভারতের পক্ষে আজ ফের বলা হয়েছে, ভারতের লড়াই ছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু লজ্জার বিষয় হল, পাকিস্তানের সেনা সন্ত্রাসবাদীদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ডিরেক্টর জেনারেল অব এয়ার অপারেশন (ডিজিএও) এয়ার মার্শাল ভারতী বলেন, ‘‘সেই কারণে ঠিক করা হয়, পাকিস্তান সেনাকে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। পাকিস্তান সেনার যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য পাকিস্তান নিজেই দায়ী।’’ সব মিলিয়ে চার দিনের সংঘর্ষে পাকিস্তানের ১১টি বায়ুসেনা ঘাঁটি ভারতের হামলারশিকার হয়েছে।

আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘যে সমস্ত বায়ুসেনা ঘাঁটি নিয়ে পাকিস্তানের গর্ব ছিল, সেখানে ভারতের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। তিন দিনের হামলায় ভারতীয় বায়ুসেনা সেই সব ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে, যা পাকিস্তান কল্পনাও করতে পারেনি। অন্য দিকে গোটা পৃথিবী দেখেছে, কী ভাবে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছে ভারতের আকাশ প্রতিরোধী ব্যবস্থা।’’

পাকিস্তানের পাঠানো ড্রোন, দ্রুত গতির ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে শুক্রবার রাতে ভারতীয় বায়ুসেনা পাকিস্তানের একাধিক সেনা ছাউনি লক্ষ্য করে প্রত্যাঘাত করে। এর মধ্যে নুর খান এয়ারবেসকেও হামলার জন্য বেছে নেয় ভারত। রাওয়ালপিন্ডির চাকলালা এলাকায় অবস্থিত ওই বায়ুসেনা ঘাঁটির খুব কাছে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের দফতর। সূত্রের মতে, নুর খানে ভারতীয় বায়ুসেনা হামলা চালাতেই নিরাপত্তার খাতিরে বাঙ্কারে ঢুকে যান মুনির। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও সেনাপ্রধান যদি প্রাণ বাঁচাতে যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেন, তা হলে তা সেনার মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া নুর খান বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের দূরত্ব মাত্র কুড়ি কিলোমিটার। সূত্রের মতে, ভারত যে চাইলে ইসলামাবাদকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানাতে পারে, তা স্পষ্ট হয়ে যায় নুর খানেহামলার পরেই।

সারগোদা বা মুশাফ এয়ারবেসে ভারতীয় সেনার হামলাও পাকিস্তানের মনোবল ভেঙে দেয় বলে খবর। ভারতের পঞ্জাব সীমান্ত থেকে প্রায় দু’শো কিলোমিটার দূরে সারগোদা বিমান ঘাঁটি। তা সত্ত্বেও ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ওই বিমানঘাঁটিতে এসে পড়ায় রানওয়ের একটি বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের বড় ধরনের অপারেশনের ঘাঁটি হল সারগোদা। আমেরিকার কাছ থেকে পাওয়া এফ-১৬ বিমানের ৯ ও ২৯ স্কোয়াড্রনের ঘাঁটি। ভারত তাই পরিকল্পিত ভাবে ওই বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে সারগোদা থেকে এফ-১৬ বিমানের ওঠা-নামা বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়।

তা ছাড়া সরগোদা বিমানঘাঁটির কাছেই রয়েছে কিরানা পাহাড়। দেখতে কালো বলে ‘কালা পাহাড়’ পরিচিত ওই পাহাড়ের ভিতরের বাঙ্কারে পাকিস্তানের আধুনিক অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে। আজ এয়ার মার্শাল ভারতীকে প্রশ্ন করা হয়, কিরানা পাহাড়ে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে বলে শোনা যায়। সেখানে কি ভারত হামলা চালিয়েছে? জবাবে ভারতী বলেন, ‘‘কিরানা পাহাড়ে যে পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে, এই তথ্য জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আমাদের কাছে এ ধরনের কোনও তথ্য ছিল না। আমরা কিরানা পাহাড় লক্ষ্য করে কোনও হামলা চালাইনি।’’

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ভারত কিরানা পাহাড় সংলগ্ন সারগোদা বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে নির্দিষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছিল। যে কারণে শুক্রবার গভীর রাতে ওই হামলার পরে সকাল হতেই সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে পাক সেনা। শনিবার দুপুরে দু’পক্ষের বৈঠকের পরে বিকালে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করা হয়।

পাকিস্তান ঢেউয়ের মতো একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও ভারতের সুসমন্বিত এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা সেই হামলাকে সম্পূর্ণ ভাবে রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বায়ু সেনা। চার দিনের সংঘর্ষে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ড্রোন, অ্যানম্যানড কমব্যাট এরিয়াল ভেহিকল এবং ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু ভারতের আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রতিরোধী ব্যবস্থা ও বহুস্তরীয় প্রতিরোধী সেন্সর ও শস্ত্রব্যবস্থা ভারতকে এই যুদ্ধে এগিয়ে রাখে। এ বারে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের মূল সংঘাত হয়েছে আকাশে। ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রভিত্তিক এই লড়াই চিরাচরিত যুদ্ধের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বলেই মত ভারতীর। তাঁর কথায়,‘‘এটা হওয়ারই ছিল। ভগবান না করুন, যদি আবার আমাদের লড়তে হয়, সেটি হবে এটির থেকে একেবারে আলাদা। এ একেবারে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। শত্রুপক্ষকে মাত করতে হলে তাদের থেকে এগিয়ে থাকতেহবে আমাদের।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India Pakistan Tension India-Pakistan

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।