দিল্লির যন্তর-মন্তরে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।
সেলাইয়ের কাজ পেলে দিনে একশো টাকা তা-ও হাতে মেলে। সেটাই ভরসা। তা না হলে দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার চালানো দায়। কারণ, মাস গেলে পেনশন আসে মাত্র ৬০০ টাকা!
দিল্লির যন্তর-মন্তরের সামনে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন মহারাষ্ট্র থেকে আসা অনিতা নাওয়ালে। বছর আটেক আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। তার পর ভেবেছিলেন, পেনশন পাবেন। কিন্তু সেটি পেতেও কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি।
পাশে বসে নুরজাহান শেখ বলেন, ‘‘মাস গেলে পেনশন পাই ৬০০ টাকা। কিন্তু সেটুকু পেতেও ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় বাবুদের। ঘুষ নেই তো পেনশনও নেই। সে জন্য অনেকে পেনশনও পান না। বুড়ো বয়সেও গতর খেটে সংসার চালাতে হয়।’’
দারিদ্রসীমার নীচে প্রবীণদের পেনশন দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু দশ বছর ধরে কেন্দ্রের অনুদান মাসে ২০০ টাকাই থেকে গিয়েছে। অর্থাৎ, সরকার মনে করে, প্রতিদিন ৭ টাকাতেই সংসার চলবে প্রবীণদের! এর উপরে এক একটি রাজ্য অবশ্য নিজেদের মতো করে অনুদান দেয়। সরকারি হিসেব বলছে, মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাত-সহ প্রায় দশটির বেশি রাজ্যে মাসিক পেনশনের অঙ্কটা ৫০০ টাকার কম! কেরল, দিল্লি, গোয়ার মতো হাতে গোনা কয়েকটি রাজ্যে এটি হাজার টাকার বেশি।
পেনশন পরিষদ তাই গোটা দেশ থেকে আসা হাজার দশেক ভুক্তভোগীকে দিল্লির যন্তর-মন্তরে জড়ো করেছে। পরিষদের নিখিল দে-র বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই, পেনশন সকলের জন্য হোক। পেনশনে দারিদ্রসীমার উপরে বা নীচে বলে কিছু থাকা উচিত নয়। ন্যূনতম ভাতার অর্ধেক পেনশন হওয়া উচিত। আর মূল্যবৃদ্ধির হারের সঙ্গে এটি যুক্ত করে দিলে সময়ে সময়ে এটিও বাড়বে।’’
যন্তর-মন্তর থেকে এ দিন আওয়াজ উঠল, পেনশনের পরিমাণ মাসে অন্তত ৩ হাজার টাকা হওয়া উচিত। পেনশন নয় তো ভোটও নয়। ২০১৯ সালে মোদী সরকারের এই বিষয়টি স্পষ্ট বুঝে নেওয়া উচিত। পরিষদের মতে, আজ ভারতে ১০ কোটি মতো বয়স্ক মানুষ রয়েছেন। মোট ভোটারের প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ। কিন্তু সরকারি প্রকল্পের সুফল পান মাত্র আড়াই কোটি প্রবীণ। অর্থাৎ, চার ভাগের তিন ভাগই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাঁদের মধ্যে মহিলাও অনেক। এর উপর পেনশন প্রতি মাসে ঠিক মতো আসে না, দুর্নীতি বিস্তর। আধার নিয়েও হেনস্থা কম হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy