রায়পুর, ২০ মার্চ: ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমনে ফের বড় মাপের সাফল্য পেল বলে দাবি করল নিরাপত্তাবাহিনী। এ দিন বস্তার অঞ্চলের দু’জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে অন্তত ৩০ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করল প্রশাসন। প্রাণ হারিয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। ‘নকশালমুক্ত ভারত’-এর লক্ষ্যে এটি বড় সাফল্য বলে সমাজমাধ্যমে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আইজি (বস্তার রেঞ্জ) পি সুন্দররাজন জানান, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানার কাছে বীজাপুরের গঙ্গালুর থানা এলাকায় রাজ্য পুলিশের টাস্ক ফোর্স এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ডের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের গুলির লড়াই শুরু হয়। সেখানে ২৬ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরক। ওই অভিযানে ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ডের এক জওয়ানেরও মৃত্যু হয়েছে। চার জন সন্দেহভাজন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে নারায়ণপুরের সীমানার কাঙ্কের জেলার কোরস্কোডো গ্রামের কাছে। আজ ভোরে সেখানে অভিযানের সময়ে নারায়ণপুরের অবুঝমাড়ের জঙ্গলে মাওবাদীদের বিছিয়ে রাখা বিস্ফোরক থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে নিরাপত্তাবাহিনীর একটি দল। কাঙ্কেরে অভিযান চালায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড। গুলির লড়াইয়ের জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র। দু’জায়গাতেই অভিযান চলছে।
আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘মোদী সরকার নকশালদের বিরুদ্ধে ক্ষমাহীন পন্থা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সুযোগ-সুবিধা সত্ত্বেও যারা আত্মসমর্পণ করছে না, তাঁদের একেবারেই বরদাস্ত না করার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী বছরের ৩১ মার্চের আগেই দেশ নকশালমুক্ত হতে চলেছে।’
২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ ‘মাওবাদীমুক্ত’ করার ঘোষণা আগেই করেছিলেন শাহ। এ দিকে, ২০২৩ সালে বিজেপি ছত্তীসগঢ়ের ক্ষমতায় আসার পরে মাওবাদী দমনে যৌথ বাহিনীকে খোলা ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক কিছু সূত্রের দাবি। জনজাতি অধিকার আন্দোলনের নেত্রী সোনি সোরি অবশ্য ক’দিন আগেই সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গল পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য মাওবাদী দমনের নামে আদিবাদী উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে।
আজকের জোড়া অভিযানের পরে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় গেরুয়া শিবির। সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হচ্ছে, ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মাওবাদী হামলা কমেছে ৫৩ শতাংশ। মাওবাদীদের হাতে নিরাপত্তাকর্মীদের মৃত্যু ৭৩ শতাংশ এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যু ৭০ শতাংশ কমেছে।
সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)