Advertisement
E-Paper

আমেরিকার ৫০% শুল্ক কোপে ধাক্কা খেতে পারে কোন কোন পণ্যের রফতানি? কিছু পণ্যের দামও কি কমতে পারে ভারতে

ট্রাম্পের শুল্কের জেরে ভারতের বেশ কিছু পণ্যের আমেরিকায় রফতানি ধাক্কা খেতে পারে। সে ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত পণ্য দেশীয় বাজারে চলে আসার সম্ভবনা কতটা? কোনও পণ্যের দাম কি কমতে পারে ভারতে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ২২:২০
ভারতীয় পণ্যে বুধবার থেকে ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করল আমেরিকা।

ভারতীয় পণ্যে বুধবার থেকে ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করল আমেরিকা। —প্রতীকী চিত্র।

ভারতীয় পণ্যের উপর বুধবার থেকে চড়া (৫০ শতাংশ) হারে আমদানি শুল্ক কার্যকর হয়ে গিয়েছে আমেরিকায়। এখন পর্যন্ত দু’টি দেশের উপরেই এই হারে শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প— ব্রাজ়িল এবং ভারত। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলির উপর আমেরিকার শুল্কহার তুলনায় অনেকটাই কম। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতের বস্ত্র, রত্ন, গহনা, গালিচা, আসবাব, চিংড়ি রফতানির উপর সবচেয়ে বেশি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারত থেকে গত অর্থবর্ষে ২৪০ কোটি ডলারের চিংড়ি রফতানি হয়েছিল আমেরিকায়। ভারতের মোট রফতানি করা চিংড়ির ৩২.৪ শতাংশই গিয়েছিল সে দেশে। এ দেশ থেকে প্রায় ১০০০ কোটি ডলারের রত্ন এবং গহনাও আমেরিকায় রফতানি হয়। নয়া শুল্কনীতির ফলে সেগুলির উপর শুল্ক ২.১ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫২.১ শতাংশ হয়েছে। গত অর্থবর্ষে ভারত থেকে ১০০০ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের বস্ত্র আমেরিকায় গিয়েছিল। ভারতের মোট বস্ত্র রফতানির ৩৫ শতাংশই যায় আমেরিকায়। আগে এগুলির উপর ১৩.৯ শতাংশ শুল্ক ছিল। এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬৩.৯ শতাংশ।

ভারত মোট যত গালিচা রফতানি করে, তার প্রায় ৫৮.৬ শতাংশ যায় আমেরিকায়। গত অর্থবর্ষে আমেরিকায় ১২০ কোটি ডলারের গালিচা রফতানি করেছিল ভারত। এখন এগুলির উপর শুল্ক ২.৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫২.৯ শতাংশ হচ্ছে। একই রকম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে হস্তশিল্প, চামড়াজাত পণ্য এবং জুতোও।

রফতানি কমে গেলে কি দেশীয় বাজারে এই পণ্যগুলি সস্তা হতে পারে? আপাত ভাবে তেমনই মনে হতে পারে। সাধারণত আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি পেলে বাজারে সেই পণ্যের দামও বৃদ্ধি পায়। ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করার অর্থ আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাবে। সে ক্ষেত্রে আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের চাহিদা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য দিকে পাকিস্তান বা বাংলাদেশের পণ্যে তুলনামূলক কম শুল্ক থাকায় সেগুলির দামও আমেরিকার বাজারে কম থাকবে। ফলে মার্কিন আমদানিকারকেরা সেই পণ্যগুলির দিকে ঝুঁকতে পারেন।

এমন অবস্থায় আপাত ভাবে মনে হতেই পারে, আমেরিকার বাজারে যে পণ্যগুলি যেত তা ভারতীয় বাজারে বিক্রি করতে হবে। ফলে দেশীয় বাজারে ওই পণ্যগুলি বৃদ্ধি পাবে এবং দামও কমবে। কিন্তু সমীকরণ এতটা সরল নয়। বিদেশে কোনও পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের গুণমান মেনে তা তৈরি করতে হয়। ফলে রফতানি হওয়া পণ্য এবং দেশীয় বাজারে বিক্রি হওয়া পণ্য একই মানের নয়। রফতানি হওয়া পণ্য সাধারণত উচ্চমানের হয়ে থাকে। ফলে এ দেশের সাধারণ মানুষের ব্যয় ক্ষমতা এবং চাহিদার কথা বিবেচনা করলে, সেই পণ্য দেশীয় বাজারে বিক্রি করে যা লাভ আসবে, তা রফতানি করা পণ্যের তুলনায় কম হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সে ক্ষেত্রে দেশীয় বাজারে বিক্রির বদলে অন্য কোনও বিদেশি বাজার খুঁজে নেওয়াই অনেক বেশি যুক্তিগ্রাহ্য।

তবে বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে পেতে কিছুটা সময়ও লেগে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোন রফতানিকারকের কাছে কতটা পুঁজি রয়েছে, তার উপরেও বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভরশীল। বড় ব্যবসায়ীরা উপযুক্ত বাজার খুঁজে পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন। কিন্তু তুলনামূলক স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ী, যাঁদের বাজারে ঋণ রয়েছে, কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য টাকা লাগবে, তাঁদের কাছে সুযোগ সীমিত। সে ক্ষেত্রে তারা দেশীয় বাজারেই সবচেয়ে বেশি দাম যেখানে পাবেন, সেখানে পণ্যটি বিক্রির চেষ্টা করতে পারেন। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, বস্ত্র, চামড়াজাত পণ্যের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা দেখা যেতে পারে।

US Tariff Donald Trump US Tariff War
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy