Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Sharad Arvind Bobde

প্রথা ভেঙে কলেজিয়াম-বৈঠক বোবডের

তুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হয়ে যাওয়ার পরেও আজ প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে কলেজিয়ামের বৈঠক ডাকলেন।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩৯
Share: Save:

তাঁর আমলে সুপ্রিম কোর্টে কোনও নতুন বিচারপতি নিয়োগ হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ জন প্রবীণতম বিচারপতিকে নিয়ে তৈরি কলেজিয়ামের বৈঠক ডাকা হলেও ঐকমত্য হয়নি। ফলে কলেজিয়াম কারও নাম সুপারিশই করতে পারেনি।

অবসরের আগে শেষ বেলায়, নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হয়ে যাওয়ার পরেও আজ প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে কলেজিয়ামের বৈঠক ডাকলেন। প্রথা ভেঙে ডাকা এই বৈঠক নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একই ভাবে প্রধান বিচারপতিকেও বৈঠকের মধ্যে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। এই সূত্র অনুযায়ী, পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন প্রবীণ বিচারপতি এই বৈঠক ডাকা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এ দিনের কলেজিয়ামের বৈঠকেও নতুন বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আর একটি সূত্রের দাবি, কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও বৈঠকে কোনও মতপার্থক্য হয়নি। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশেই বৈঠক হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে এখন প্রধান বিচারপতি ছাড়া বিচারপতি এন ভি রমণা, বিচারপতি রোহিনটন ফলি নরিম্যান, বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ও বিচারপতি এ এম খানউইলকর রয়েছেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি ২০১৯-এর নভেম্বরে দায়িত্ব নিয়েছেন। আগামী ২৩ এপ্রিল তিনি অবসর নেবেন। ইতিমধ্যে বিচারপতি এন ভি রমণা পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন বলে রাষ্ট্রপতির নির্দেশিকাও জারি হয়ে গিয়েছে। সাধারণত এই সময়ে প্রধান বিচারপতি কলেজিয়ামের বৈঠক ডাকেন না। বিচারপতি রমণার নিয়োগের নির্দেশিকার আগেই অবশ্য বৈঠক ডাকা ছিল। কিন্তু তারপরেও প্রধান বিচারপতি কেন বৈঠক বাতিল করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই প্রশ্নের মধ্যেই খোদ বিচারপতি রমণা আজ নিজের এজলাস থেকে ছুটি নিয়ে নেন। কলেজিয়ামের বৈঠকে অবশ্য তিনি হাজির ছিলেন।

সূত্রের বক্তব্য, বর্তমান প্রধান বিচারপতির ১৭ মাসের মেয়াদে সুপ্রিম কোর্টে যে কোনও নতুন বিচারপতি নিয়োগ হয়নি, তার মূল কারণ কলেজিয়ামের মধ্যে মতপার্থক্য। তা মূলত বিচারপতি আকিল আব্দুল হামিদ কুরেশিকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ নিয়ে। বিচারপতি কুরেশি গুজরাতে থাকাকালীন রাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বর্তমানে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় জেলে পাঠিয়েছিলেন। বিচারপতি কুরেশিকে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম মধ্যপ্রদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করলে কেন্দ্র তাতে আপত্তি তোলে। পরে তাঁকে ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ করা নিয়ে কলেজিয়ামে মতানৈক্য হয়। তাঁর নামে ঐকমত্য না হওয়ায় অন্যদের নাম সুপারিশ করার সিদ্ধান্তও আটকে থাকে। এর মধ্যে কর্নাটকের মহিলা বিচারপতি বি ভি নাগারত্নার নামও রয়েছে। তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ করা হলে, তিনিই দেশের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হতেন। কিন্তু কলেজিয়ামের একাধিক বিচারপতির মত ছিল, আগে বিচারপতি কুরেশির নাম সুপারিশ করতে হবে। তারপরে অন্যদের কথা ভাবা হবে।

এই জটিলতার জেরেই সুপ্রিম কোর্টে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের অবসরের ফলে শূন্যস্থানও পূরণ হয়নি। তাঁর পরে আরও চার বিচারপতি অবসর নিয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি নিয়োগের জন্য শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম কোনও নামই সুপারিশ করতে পারেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE