রাজ্যসভায় এত দিনের বন্ধু এবং সতীর্থদের সামনে কাছে একঘরে হয়ে গেলেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ারের একদা ছায়াসঙ্গী প্রফুল্ল পটেল। এমনকি শরদ কন্যা সুপ্রিয়া সুলে সংসদে ছায়াও মাড়াচ্ছেন না তাঁর। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিশ্বাসঘাতকতার। তিনি বিজেপি সরকারের সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে সংসদের চলতি বর্ষাকালীন অধিবেশনে প্রথম বার ঢুকে শীতল ব্যবহার ও অবজ্ঞাই পেলেন পুরনো সতীর্থদের কাছে। অন্য দিকে তাঁকে জড়িয়ে ধরতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতা মন্ত্রীদের।
অথচ বিরোধীদের প্রথম পটনা বৈঠকেও পওয়ারের সঙ্গী হয়ে পৌঁছেছিলেন প্রফুল্ল। তখনই তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে মগ্ন। সে সময়েও তাঁর সঙ্গে আন্তরিক ভাবে কথা বলেছিলেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। রাজ্যসভায় দু’জনের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও কারও অবিদিত নয়। কিন্তু সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রফুল্ল রাজ্যসভায় ঢুকেই যখন স্বভাববশত প্রথমেই জয়রামের দিকে আসেন, কংগ্রেস নেতার মুখে বিরক্তি গোপন থাকেনি। জানা গিয়েছে, জয়রাম প্রফুল্লকে বলেন, ‘‘আপনাকে এখানে আসতে হবে না। কোনও ব্যাখ্যা আমাকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’’ তবুও জনে জনে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রফুল্ল। তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সতীর্থ বন্দনা চহ্বাণ শ্লেষাত্মক ভাবে বলেন, ‘‘এমন উপহার আপনি কখনও আমাদের দেননি। কোনও ব্যাখ্যারই প্রয়োজন নেই আর।’’ রাজ্যসভার বিরোধী সমন্বয়ের প্রশ্নে তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন যোগাযোগ রাখতেন পটেলের সঙ্গে। কিন্তু এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডেরেক সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে যান তাঁকে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘লিঙ্ক রোডের কোনও পকেটমার অথবা গ্রান্ট রোডের কোনও দালালের প্রতিও আমার পেশাদার শ্রদ্ধা রয়েছে। নেই ওরলি প্লেসের কোনও বিশ্বাসঘাতকের উপর।’’ প্রফুল্ল এ কথাই বোঝাতে চেষ্টা করেন, যে গত তিন দিনের মধ্যে তিনি দু’দিন তাঁর রাজনৈতিক গুরু পওয়ারের সঙ্গে কাটিয়েছেন। এ কথা শুনে সুপ্রিয়া তাঁর ঘনিষ্ঠ বিরোধী সাংসদদের বলেন, এই কথা সর্বৈব মিথ্যা। বিরোধীদের কাছ থেকে অবজ্ঞা পাওয়ার পর প্রফুল্ল এগোন সরকারি বেঞ্চের দিকে। সেখানে অবশ্য তাঁর জোটে উষ্ণ অভ্যর্থনা। অনেকে জড়িয়েই ধরেন। সূত্রের বক্তব্য, এঁরাই কিছু দিন আগে পটেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্ত নিয়ে সক্রিয় ছিলেন!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)