মহারাষ্ট্রে ২৮৮ আসনের বিধানসভায় সরকার গড়তে দরকার ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন। বিজেপির ১০৫ ও শিবসেনার ৫৬ মিলে যা অনায়াসে হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি বিজেপির সঙ্গে বনিবনা না হয়, তা হলে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস (৫৬-৫৪-৪৪) মিলেও সরকার হয়। কিন্তু দিল্লিতে কংগ্রেস সূত্রের মতে, শিবসেনাকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়ার ব্যাপারে আগ্রহী নয় দল। অতীতে রাহুল গাঁধী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, সেনাকে সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে নন তিনি। কংগ্রেসের নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘শরদ পওয়ার বলেছেন, তিনি মহারাষ্ট্রের সরকার গড়ার দৌড়ে নেই। ফলে এ বিষয়ে সেখানেই ইতি টানা ভাল।’’
কিন্তু রাজ্য কংগ্রেসের অনেকে চান, বিজেপি-শিবসেনার সমঝোতা ভেস্তে গেলে সেনা-এনসিপি সরকার হোক। মুখ্যমন্ত্রী শিবসেনার হবে, কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন দেবে। সে ক্ষেত্রে বিরোধীদের আশঙ্কা, মোদী সরকার বিভিন্ন ‘এজেন্সি’ মারফত না খড়গহস্ত হয়! ইতিমধ্যেই প্রফুল্ল পটেলের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। শরদ পওয়ারের নামও ভোটের আগেই তদন্তের তালিকায় উঠেছে। তাই দলের অন্য নেতারা ভিন্ন বার্তা দিলেও ‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’ নিজে বলছেন, সেনার সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন নেই। প্রফুল্ল পটেলকে দিয়েও একই কথা বলাচ্ছেন।
কিন্তু পওয়ারকে উস্কে দিতে আজ শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-য় দলের নেতা সঞ্জয় রাউত লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেস ও এনসিপি মিলে যে একশোর মতো আসন পেয়েছে, তার পুরো কৃতিত্ব একা শরদ পওয়ারের। বিজেপির রথ রুখেছেন তিনি।’’ এনসিপির এক নেতা বলেন, ‘‘শিবসেনা আসলে বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষি করার জন্য পওয়ারকে ব্যবহার করছে। এনসিপির সঙ্গে মিলে সরকার গড়ার ব্যাপারে এখনই আন্তরিক নয় সেনা। সে কারণেই পওয়ার সেনার কৌশলে জল ঢালতে চাইছেন।’’
কেন্দ্রে শরিক মন্ত্রী তথা মহারাষ্ট্রের নেতা রামদাস আটওয়ালে আবার উপমুখ্যমন্ত্রিত্বের তত্ত্ব তুলে বলেছেন, ‘‘মনে হয় না ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করার ব্যাপারে বিজেপি রাজি হবে। তবে সেনাকে পাঁচ বছরের জন্য উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়া যেতেই পারে।’’ দিল্লিতে বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘বাস্তব বিচার করেই সিদ্ধান্ত হবে। অযথা উত্তাপ বাড়িয়ে লাভ কী?’’ এর মধ্যেই তিন নির্দল বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনের কথা বলেছেন।