Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রশংসাতেও চুপ শরদ, সেনা-সঙ্গ চায় না কংগ্রেসও

বিজেপিকে চাপে ফেলতে সেনার মুখপত্রে আজ ফের পওয়ারের প্রশংসা করে প্রয়াত বালসাহেব ঠাকরের উক্তি তুলে বলা হয়েছে, উদ্ধবের হাতে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার ‘রিমোট কন্ট্রোল’।

শরদ পওয়ার।—ছবি পিটিআই।

শরদ পওয়ার।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৫
Share: Save:

তাড়াহুড়ো করে হরিয়ানায় মুখ্যমন্ত্রীর শপথও হয়ে গেল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে এখনও সে ভাবে গা নেই কারও। অথচ রোজই সেখানে উত্তাপ বাড়াচ্ছেন উদ্ধব ঠাকরে। আর তা ভেস্তে দিতে চাইছেন শরদ পওয়ার।

বিজেপিকে চাপে ফেলতে সেনার মুখপত্রে আজ ফের পওয়ারের প্রশংসা করে প্রয়াত বালসাহেব ঠাকরের উক্তি তুলে বলা হয়েছে, উদ্ধবের হাতে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার ‘রিমোট কন্ট্রোল’। তবে পওয়ার জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে জনমত বিজেপি-শিবসেনার পক্ষে। তাই কংগ্রেস-এনসিপি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। তবে কংগ্রেস-এনসিপির অনেকে বলছেন, শিবসেনা একা সরকার গড়লে তাঁরা পাশে আছেন।

উদ্ধব কেন বলছেন, সরকার গড়ার রিমোট তাঁর হাতে? শুধুই কি ছেলে আদিত্য ঠাকরেকে আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করতে? তাই কি বিজেপির থেকে লিখিত আশ্বাস চায় সেনা? যদি ‘রিমোট’ তাঁর হাতেই থাকে, তা হলে এখনই এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে সরকার গড়ছেন না কেন? সে ক্ষেত্রে তো পাঁচ বছরের জন্যই সেনার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারে!

মহারাষ্ট্রে ২৮৮ আসনের বিধানসভায় সরকার গড়তে দরকার ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন। বিজেপির ১০৫ ও শিবসেনার ৫৬ মিলে যা অনায়াসে হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি বিজেপির সঙ্গে বনিবনা না হয়, তা হলে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস (৫৬-৫৪-৪৪) মিলেও সরকার হয়। কিন্তু দিল্লিতে কংগ্রেস সূত্রের মতে, শিবসেনাকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়ার ব্যাপারে আগ্রহী নয় দল। অতীতে রাহুল গাঁধী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, সেনাকে সঙ্গে নেওয়ার পক্ষে নন তিনি। কংগ্রেসের নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘শরদ পওয়ার বলেছেন, তিনি মহারাষ্ট্রের সরকার গড়ার দৌড়ে নেই। ফলে এ বিষয়ে সেখানেই ইতি টানা ভাল।’’

কিন্তু রাজ্য কংগ্রেসের অনেকে চান, বিজেপি-শিবসেনার সমঝোতা ভেস্তে গেলে সেনা-এনসিপি সরকার হোক। মুখ্যমন্ত্রী শিবসেনার হবে, কংগ্রেস বাইরে থেকে সমর্থন দেবে। সে ক্ষেত্রে বিরোধীদের আশঙ্কা, মোদী সরকার বিভিন্ন ‘এজেন্সি’ মারফত না খড়গহস্ত হয়! ইতিমধ্যেই প্রফুল্ল পটেলের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। শরদ পওয়ারের নামও ভোটের আগেই তদন্তের তালিকায় উঠেছে। তাই দলের অন্য নেতারা ভিন্ন বার্তা দিলেও ‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’ নিজে বলছেন, সেনার সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন নেই। প্রফুল্ল পটেলকে দিয়েও একই কথা বলাচ্ছেন।

কিন্তু পওয়ারকে উস্কে দিতে আজ শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-য় দলের নেতা সঞ্জয় রাউত লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেস ও এনসিপি মিলে যে একশোর মতো আসন পেয়েছে, তার পুরো কৃতিত্ব একা শরদ পওয়ারের। বিজেপির রথ রুখেছেন তিনি।’’ এনসিপির এক নেতা বলেন, ‘‘শিবসেনা আসলে বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষি করার জন্য পওয়ারকে ব্যবহার করছে। এনসিপির সঙ্গে মিলে সরকার গড়ার ব্যাপারে এখনই আন্তরিক নয় সেনা। সে কারণেই পওয়ার সেনার কৌশলে জল ঢালতে চাইছেন।’’

কেন্দ্রে শরিক মন্ত্রী তথা মহারাষ্ট্রের নেতা রামদাস আটওয়ালে আবার উপমুখ্যমন্ত্রিত্বের তত্ত্ব তুলে বলেছেন, ‘‘মনে হয় না ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করার ব্যাপারে বিজেপি রাজি হবে। তবে সেনাকে পাঁচ বছরের জন্য উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়া যেতেই পারে।’’ দিল্লিতে বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘বাস্তব বিচার করেই সিদ্ধান্ত হবে। অযথা উত্তাপ বাড়িয়ে লাভ কী?’’ এর মধ্যেই তিন নির্দল বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনের কথা বলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE