প্রশ্নকর্তা পুত্র। আর হাসিমুখে উত্তর দিচ্ছেন পিতা। বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল ওয়াশিংটন। ভারতের প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে আমেরিকায় গিয়ে পুত্র ঈশান তারুরের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরকে।
তারুর-পুত্র ঈশান প্রাক্তন কূটনীতিক তথা রাজনীতিক পিতার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন যে, কোনও দেশ পহেলগাঁও কাণ্ডে পাক যোগের প্রমাণ নিয়ে ভারতীয় প্রতিনিধিদলকে প্রশ্ন করেছে কি না। ছেলের প্রশ্ন শুনে স্মিত হেসে তারুর বলেন, “আমি খুশি যে তুমি প্রশ্নটা তুলেছ।” তার পরেই তারুর বলেন, “সত্যি বলতে কী, (পহেলগাঁও কাণ্ডে পাকিস্তানের যোগসাজশ নিয়ে) কারও কোনও ধন্দ নেই। আমাদের কাছে কেউ প্রমাণ নিয়ে প্রশ্নও তোলেননি। হ্যাঁ, দু’-তিন জায়গায় সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে প্রশ্ন করেছে।”
পুত্রের প্রশ্নের উত্তরে তারুর বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী হামলায় পাকিস্তানের যোগসাজশ সংক্রান্ত ৩৭ বছরের একটি ছক তুলে ধরেন। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে লালন করে, এই দাবির সপক্ষে তারুর তিনটি ‘প্রমাণ’ হাজির করেন। তার প্রথমটি হল ২০০৮ সালের মুম্বই হামলা, যেখানে জীবিত অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়া জঙ্গি পাকিস্তানের নাগরিক বলে প্রমাণিত হয়। একই সঙ্গে তারুর স্মরণ করিয়ে দেন, পাক সেনার নাকের ডগায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন ওসামা বিন লাদেন।
দ্বিতীয় প্রমাণ হিসাবে তারুর জানান, পহেলগাঁও কাণ্ডের দায় নেওয়া সন্ত্রাসবাদী সংগঠন টিআরএফ লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন। লশকরের ঘাঁটি যে পাকিস্তানেই, সে কথাও জানান তারুর। পাক যোগের তৃতীয় প্রমাণ হিসাবে তারুর হত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাকিস্তানের সেনা আধিকারিকদের উপস্থিত থাকার ঘটনাটি তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুরে’ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গিঘাঁটিকে। সেই হামলায় হত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাক সেনাকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন, এমন একাধিক ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে (যদিও এগুলোর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। সেই ছবিগুলির দিকে ইঙ্গিত করে এর আগেও পাকিস্তানকে তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।