Advertisement
E-Paper

আমেরিকাতেই শিনা, নতুন দাবি ইন্দ্রাণীর

মারা যাননি নাকি শিনা। তিনি রয়েছেন আমেরিকায়। মুম্বই পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার জেরার মুখে এমনটাই দাবি করেছেন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। তা হলে, তাঁর মৃত্যু নিয়ে এত জলঘোলা হচ্ছে জেনেও কেন প্রকাশ্যে আসছেন না শিনা? পুলিশ জানাচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তরে ইন্দ্রাণীর বক্তব্য, শিনা ঘৃণা করেন তাঁকে। তাই। ইন্দ্রাণীর এমন দাবি অবশ্য বিশ্বাস করছে না মুম্বই পুলিশ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩২
ছবিটি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক থেকে নেওয়া।

ছবিটি ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক থেকে নেওয়া।

মারা যাননি নাকি শিনা। তিনি রয়েছেন আমেরিকায়। মুম্বই পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার জেরার মুখে এমনটাই দাবি করেছেন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়।

তা হলে, তাঁর মৃত্যু নিয়ে এত জলঘোলা হচ্ছে জেনেও কেন প্রকাশ্যে আসছেন না শিনা? পুলিশ জানাচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তরে ইন্দ্রাণীর বক্তব্য, শিনা ঘৃণা করেন তাঁকে। তাই। ইন্দ্রাণীর এমন দাবি অবশ্য বিশ্বাস করছে না মুম্বই পুলিশ। এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়, এক এক বার এক এক রকম গল্প বলে বিভ্রান্ত করছেন ইন্দ্রাণী।

জেরার মুখে শিনার খুনের কথা স্বীকার করার পরেই ইন্দ্রাণীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে আবার জেরার মুখে ইন্দ্রাণী দাবি করেন, শিনাকে তিনি ঘৃণা করতেন। তবে খুন করেননি। সঞ্জীব খন্নাও জেরায় স্বীকার করেছিলেন, শিনাকে খুনের সময় তিনি গাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন। অর্থাৎ প্রকারান্তরে শিনার খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। আর এ দিন পুরো উল্টো কথা বলেছেন ইন্দ্রাণী। মুম্বই পুলিশের একটি সূত্র বলছে, এই তত্ত্ব বিশ্বাসযোগ্য নয়। গত তিন বছরে ভারতে থেকে যাঁরা আমেরিকা গিয়েছেন তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

মুম্বই পুলিশের বরং দাবি, খুনের পর ইন্দ্রাণীই বরং বেশির ভাগ সময়টাই ব্রিটেনে কাটিয়েছেন। প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে গাড়িচালক শ্যামের মুখ বন্ধ করেন তিনি। শ্যামকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেন। তার পরই ব্রিটেন চলে যান। খুনের আগের কয়েক মাসে শ্যাম এবং সঞ্জীব খন্নার সঙ্গে ইন্দ্রাণীর কল রেকর্ড পরীক্ষা করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ২০১১-র ডিসেম্বরে রাহুল আর শিনার বাগদান হয়। তার এক মাস পর থেকেই খুনের ছক কষতে শুরু করেন ইন্দ্রাণী।

ইন্দ্রাণী তিন বছর ধরে পরিবার-পরিজনদের বলেছেন— আমেরিকায় চলে গিয়েছেন শিনা। কিন্তু তখন শিনার ফোন ব্যবহার করতেন ইন্দ্রাণী। শিনার ওই ফোন থেকেই শিনার প্রেমিক তথা পিটার মুখোপাধ্যায়ের প্রথম পক্ষের ছেলে রাহুল মুখোপাধ্যায়কে কয়েকটি ‘ব্রেক-আপ’ মেসেজও পাঠানো হয়। তার মধ্যে পাঁচটি উদ্ধার করা গিয়েছে। একটিতে লেখা হয়েছিল, ‘‘আই লেফট ফর ইউএস... প্লিজ ডোন্ট ফলো মি’’ (আমি আমেরিকায় চলে যাচ্ছি, আমার পিছু ধাওয়া কোরো না)। এর পরের মেসেজটি হল, ‘‘আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু মেক রিলেশনশিপ উইথ ইউ এনি মোর... প্লিজ ডোন্ট কল মি... অ্যান্ড মেসেজ... আই অ্যাম হ্যাপি হিয়ার।’’ (তোমার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্কে থাকতে চাই না আমি, আমাকে আর ফোন বা মেসেজ কোরো না, আমি এখানে খুব ভাল আছি)। তৃতীয় বার্তাটি হল, ‘‘আই টোল্ড ইউ আই অ্যাম নট ইন্টারেস্টেড ইন ইউ এনি মোর... আর ইউ গেটিং দিস।’’ (আমি আগেই বলেছি, তোমার সম্পর্কে আমি আর আগ্রহী নই। বুঝতে পারছ কি বলতে চাই)। চতুর্থ মেসেজে লেখা হয়েছিল, ‘‘আই অ্যাম ইন আমেরিকা’’ (আমি আমেরিকায়)। পঞ্চম মেসেজটি হল, ‘‘আই হ্যাভ ফাউন্ড আ নিউ গাই...আই অ্যাম হ্যাপি উইথ হিম অ্যান্ড অ্যাম নো মোর ইন্টারেস্টেড ইন ইউ... সেটলিং উইথ হিম ইন ইউএসএ।’’ (এখানে আমার জীবনে নতুন মানুষ এসেছে, তাঁর সঙ্গে আমি সুখে আছি এবং তোমার সম্পর্কে আমি আর আগ্রহী নই। আমেরিকাতেই তাঁর সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে থাকব)। তবে এই মেসেজগুলি মেয়ের ফোন থেকে ইন্দ্রাণী নিজেই পাঠাতেন, না অন্য কেউ— এখনও অন্ধকারে পুলিশ।

এ ছাড়া, শিনা যে সংস্থায় চাকরি করতেন সেখানে জাল পদত্যাগপত্র পাঠানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, এই কাজে যে ল্যাপটপটি ইন্দ্রাণী ব্যবহার করেছিলেন সেটি উদ্ধার হয়েছে।

২০১২ সালে রায়গড়ের জঙ্গল থেকে পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরেও স্থানীয় পুলিশ এডিআর (অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ রিপোর্ট) করেনি। কেন এই গাফিলতি, তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার তদন্তের নির্দেশ দেন মহারাষ্ট্রের ডিজিপি। মুম্বই পুলিশের সন্দেহ, রায়গড়ের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া ওই দেহটি শিনা বরারই। কিন্তু জেজে হাসপাতাল থেকে ওই দেহ পরীক্ষানিরীক্ষা করে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল, সেটিও নিয়ে আসেনি পেন পুলিশ। ফলে নতুন করে দেহাংশ উদ্ধার করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তখন পেন পুলিশের কর্তব্যে গাফিলতি হয়েছিল, না বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পরিকল্পিত ভাবে এ সব করা হয়, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।

Sheena US Indrani murder mumbai abpnewsletters MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy