Advertisement
E-Paper

ক্যালশিয়াম কার্বাইড ভরা কন্টেনার নিয়ে কেরল উপকূলে ডুবেছে বিদেশি জাহাজ, জলে মিশলে কতটা ক্ষতি?

লাইবেরিয়ার জাহাজটিতে যে ক্যালশিয়াম কার্বাইড ছিল, তা সমুদ্রে মিশলে কতটা ক্ষতি হতে পারে? ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী (আইসিজি) সূত্রে জানা গিয়েছে, জাহাজটিতে ১৩টি ‘বিপজ্জনক’ বস্তুর কন্টেনার ছিল। তার মধ্যে ১২টিতে ছিল ক্যালশিয়াম কার্বাইড।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৫ ১৭:৫২
কোচি উপকূলের দক্ষিণ-পশ্চিমে ডুবে যাওয়া বিদেশি জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে নাবিকদের।

কোচি উপকূলের দক্ষিণ-পশ্চিমে ডুবে যাওয়া বিদেশি জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে নাবিকদের। ছবি: পিটিআই।

কেরল উপকূলে ডুবে গিয়েছে লাইবেরিয়ার জাহাজ। তাতে সওয়ার ২৪ জন নাবকিকেই উদ্ধার করা গিয়েছে। কিন্তু জাহাজে ছিল বিষাক্ত রাসায়নিকের কন্টেনার। সেই কন্টেনার সমেতই সমুদ্রে ডুবেছে জাহাজটি। উপকূলরক্ষী বাহিনীর আশঙ্কা, কন্টেনারে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক ক্যালশিয়াম কার্বাইড সমুদ্রের জলে মিশলে ক্ষতি হতে পারে সামুদ্রিক জীব এবং মানুষের।

জাহাজটির ট্যাঙ্কারে রয়েছে টন টন তেল। সেই তেলও জলে মেশার সম্ভাবনা রয়েছে। দূষণ মোকাবিলার জন্য ‘সক্ষম’ জাহাজ মোতায়েন করেছে ভারতীয় উপকূল রক্ষীবাহিনী। তেল সমুদ্রে ছড়ালে তা ‘ম্যাপিং’ করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বিমানও উড়ছে আকাশে। এখন প্রশ্ন উঠছে, লাইবেরিয়ার জাহাজটিতে যে ক্যালশিয়াম কার্বাইড ছিল, তা সমুদ্রে মিশলে কতটা ক্ষতি হতে পারে? ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী (আইসিজি) সূত্রে জানা গিয়েছে, জাহাজটিতে ১৩টি ‘বিপজ্জনক’ বস্তুর কন্টেনার ছিল। তার মধ্যে ১২টিতে ছিল ক্যালশিয়াম কার্বাইড।

রংবিহীন কঠিন রাসায়নিক ক্যালশিয়াম কার্বাইডকে ক্যালশিয়াম অ্যাসিটাইলাইডও বলে। ক্যালশিয়াম অক্সাইড এবং কার্বনের বিক্রিয়ায় এই রাসায়নিক তৈরি হয়। ফল পাকানোর কাজে ব্যবহার করা হয় এটি। তা ছাড়াও এই ক্যালশিয়াম কার্বাইড থেকে অ্যাসিটিলিন গ্যাস উৎপন্ন হয়, যা রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয়। জলের সংস্পর্শে এলেই এই ক্যালশিয়াম কার্বাইড অ্যাসিটিলিন গ্যাস এবং ক্যালশিয়াম হাইড্রোক্সাইড উৎপন্ন করে। এই বিক্রিয়ার সময় প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয়। তা ছাড়া অ্যাসিটিলিন গ্যাস নিজেও দাহ্য। সে কারণে আগুন লাগার ঝুঁকি থেকেই যায়।

জলের সঙ্গে ক্যালশিয়াম কার্বাইড মিশলে যে ক্যালশিয়াম হাইড্রক্সাইড উৎপন্ন করে, তা জলেরই অম্লত্ব বৃদ্ধি করে। জাহাজের কন্টেনার থেকে ওই রাসায়নিক জলে মিশলে সমু্দ্রের জলের পিএইচ মানের হেরফের হবে। এর ফল ভুগবে সামুদ্রিক জীবেরা। তাদের স্বাস্থ্য, বংশবৃদ্ধিও প্রভাবিত হতে পারে। জলে অ্যাসিটিলিন গ্যাস মিশলে তার মান নষ্ট হয়। সেই জল পান করলে বা চাষের কাজে ব্যবহার করলে ক্ষতি হতে পারে। স্নায়ুরোগ পর্যন্ত হতে পারে।

এসব কারণেই সতর্কতা জারি করেছে কেরল সরকার। মৎস্যজীবীদেরও নজর রাখতে বলেছে, জলে কোনও কন্টেনার ভাসছে কি না। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে। সমুদ্রে কিছু বস্তু ভেসে এলে তা ধরতে বারণ করেছে। আইসিজি সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিট নাগাদ ভারতের কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠায় লাইবেরিয়ার ওই পণ্যবাহী জাহাজ। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে নামে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। রবিবার সকালে সেই জাহাজটি পুরোপুরি সমুদ্রে ডুবে গিয়েছে। আইসিজি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছে, জাহাজে সওয়ার ২১ জনকে শনিবার উদ্ধার করেছে তারা। এর পরে উদ্ধারকাজে নামে ভারতীয় নৌবাহিনী। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘সুজাতা’ ওই জাহাজ থেকে আরও তিন নাবিককে রবিবার উদ্ধার করেছে। জাহাজের ট্যাঙ্কারে ছিল ৮৪.৪৪ মেট্রিক টন ডিজেল এবং ৩৬৭.১ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল। এই তেল সমুদ্রের জলে মিশলে কতটা বিপদ হতে পারে, তা এক প্রকার স্পষ্ট।

Kerala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy