জ়ুবিন গর্গের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত, সিঙ্গাপুরে উত্তর-পূর্ব উৎসবের উদ্যোক্তা শ্যামকানু মহন্তর নাগাল পুলিশ না পেলেও তিনি ফেসবুকে পোস্ট লিখে বললেন, “প্রিয় নাগরিকবৃন্দ, আমি শীঘ্রই আসছি। আমি ইতিমধ্যেই তা পুলিশকে জানিয়েছি। আমি সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। আমার লুকোনোর কিছু নেই। এসআইটি যে সমস্ত প্রশ্ন করবে, আমি তার উত্তর দেব।” শ্যামকানু আরও লেখেন, “আমিও চাই, সব দিক থেকে, সব বিষয়ে এবং আমার প্রিয় জ়ুবিন গর্গের মৃত্যুর উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হোক।” তবে, এই পোস্টের পরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, শ্যামকানুকে শীঘ্রই সিঙ্গাপুর থেকে ধরা হবে। অসম সরকারের অনুরোধে কেন্দ্রের আইন দফতর সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এমএলএটি চুক্তি কার্যকর করে আজ সে দেশের সরকারকে চিঠি পাঠিয়ে জ়ুবিনের মৃত্যু সংক্রান্ত এফআইআর ১৮/২০২৫-এর তদন্তে আইনি সহযোগিতা চেয়েছে। সিঙ্গাপুরের সম্মতি মিললে জ়ুবিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রমাণ, ফরেন্সিক রিপোর্ট ও সাক্ষ্য সংগ্রহ সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজ তদন্তের অংশ হিসেবে জ়ুবিনের খুড়তুতো ভাই, ডিএসপি সন্দীপন গর্গ সিআইডি কার্যালয়ে হাজির হন। ঘটনার সময় তিনিও সিঙ্গাপুরে ওই ইয়টে হাজির ছিলেন।
আসু সভাপতি উৎপল শর্মা বলেন, “শ্যামকানু মহন্ত কি ভিভিআইপি? তিনি অনায়াসে ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি আসছি’। তা হলে পুলিশ কেন এখনও শ্যামকানু, জ়ুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ ও সিঙ্গাপুর অসমিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের আটক বা জেরা করতে পারল না?”
অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি গৌরব গগৈ অভিযোগ করেন, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে জ়ুবিনের ম্যানেজারের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শ্যামকানু মহন্ত দিল্লি ও দিসপুরের বিজেপি নেতাদের ঘনিষ্ঠ। তাই হিমন্ত গোটা তদন্তকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন। গগৈ বলেন, “জ়ুবিনের দ্বিতীয় ময়না তদন্তের রিপোর্টও গোপন রাখা হচ্ছে। তাই ৩ অক্টোবর থেকে সমগ্র অসমে মোমবাতি মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে কংগ্রেস ‘জাস্টিস ফর জ়ুবিন গর্গ’ অভিযান চালাবে।” গৌরব প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জ়ুবিনের মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। শ্যামকানু মহন্ত ও সিদ্ধার্থ শর্মাকে সিআইডির সামনে হাজির হওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়ার ফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট বা বিকৃত করার সুযোগ থাকবে।
এ দিকে জ়ুবিনের স্ত্রী গরিমা গগৈ বলেছেন, সকলকে শান্তি বজায় রাখতে হবে। গত কাল শ্রাদ্ধ সারার পরে আজ তিনি সোনাপুরের শেষকৃত্যস্থলে যান। আগামী কাল সরকারি উদ্যোগে বিশাল আয়োজনে ১৩ দিনের কাজ হবে যোরহাট স্টেডিয়ামে। তাই জ়ুবিনের অস্থি আজ যোরহাটে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)