শবরীমালার সোনা-রহস্যের তদন্তে নেমে প্রথম গ্রেফতারি বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট)। ধরা পড়লেন সেই শিল্পপতি উন্নিকৃষ্ণন পট্টি! দীর্ঘ ক্ষণ জেরার পর শুক্রবার ভোরে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শবরীমালা মন্দিরে শ্রীকোভিল (গর্ভগৃহ) থেকে সোনা উধাওয়ের ঘটনায় প্রথমে তদন্ত শুরু করে ত্রাবাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড (টিডিবি)-এর তদন্তকারী দল। কেরল হাই কোর্টে জমা দেওয়া তদন্তকারীদের রিপোর্টে প্রথম উল্লেখ ছিল উন্নিকৃষ্ণনের নাম। অভিযোগ, ওই শিল্পপতির আয়ের স্থায়ী কোনও উৎস নেই। তার পরেও মন্দির কর্তৃপক্ষকে সোনা দান করেছিলেন তিনি। শুধু টিডিবি নয়, সিট-ও এ ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। যে শিল্পপতির আয়ের কোনও উৎস নেই, তিনি কী ভাবে সোনা দান করতে পারেন? কোথা থেকে এল এত সোনা? উন্নিকৃষ্ণনের গ্রেফতারির পর এই সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে আশাবাদী তদন্তকারীরা।
এখনও পর্যন্ত তদন্তে জানা গিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ওই শিল্পপতির আয়কর রিটার্নের তথ্য মিলেছে তাঁর চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের মাধ্যমে। তাঁর লেনদেনের উপর নজর রাখছিলেন তদন্তকারীরা। দেখা যায়, ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষে কামাক্ষী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা ঢুকেছিল উন্নিকৃষ্ণনের অ্যাকাউন্টে। কেন টাকা দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার মধ্যেই জানা যায়, শবরীমালা মন্দিরে উন্নিকৃষ্ণনের সোনা দানের বিষয়টি।
শবরীমালার গর্ভগৃহ থেকে সোনা ‘উধাও’ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে শোরগোল চলছে কেরলে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৯ সালে বিগ্রহের ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বিগ্রহের ওজন ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম। কী ভাবে বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেল, তা জানতে চেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই ঘটনার তদন্তেই উঠে এসেছে উন্নিকৃষ্ণনের নাম।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে সোনার ওজন হ্রাসের সঙ্গে জুড়ল উন্নিকৃষ্ণনের নাম? তদন্তকারী সূত্রে এখনও এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানানো না-হলেও বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি, বিগ্রহের মেরামতির জন্য ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই মন্দিরের দ্বারপালক মূর্তি এবং দরজার সোনার আবরণ খোলা হয়েছিল। সেই সময় সোনার ওজন ছিল ৪২.৮ কেজি। পরের দিন ওই সোনা তুলে দেওয়া হয় উন্নিকৃষ্ণনের হাতে। মন্দিরের সেই সোনা পাঠানোর কথা ছিল চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায়। কিন্তু সেই সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোয় ৩৯ দিন পর। সেই সময় ওজন করতে গিয়ে দেখা যায় সোনার ওজন ৩৮.২৫ কেজি। অর্থাৎ, ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও!