Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Sitaram Yechury

তৃণমূলকে সঙ্গী চান না ইয়েচুরি

বিহারে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে আরজেডি, কংগ্রেস, বামেরা জোট সরকার গঠনের পরে নীতীশ দিল্লিতে এসে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইয়েচুরির সঙ্গেও বৈঠক হয় তাঁর।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১৫
Share: Save:

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু দিন ধরেই বলছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে দল যে রাজ্যে শক্তিশালী, সেখানে তাদের পিছনে বাকিরা দাঁড়াবে। আজ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও সেই একই কৌশলে বিরোধী ঐক্য তোলার ডাক দিলেন। শুধু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তৃণমূলকে বাদ দিয়ে। ইয়েচুরির যুক্তি, “আমরা সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দলগুলিকে একসঙ্গে আনার চেষ্টা করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু সব অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের শাসক দল গণতান্ত্রিক নয়, যেমন পশ্চিমবঙ্গ।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যে বিরোধী জোট তৈরির চেষ্টা করছেন, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন ইয়েচুরি। ইয়েচুরির কথা শুনে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সিপিএমের নিজের শক্তি এখন এতটাই কম যে তারা বিজেপি-বিরোধী জোট নিয়ে কী ভাবল, কী করল, তাতে কিছুই যায় আসে না।

বিহারে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে আরজেডি, কংগ্রেস, বামেরা জোট সরকার গঠনের পরে নীতীশ দিল্লিতে এসে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইয়েচুরির সঙ্গেও বৈঠক হয় তাঁর। তার পরে বৃহস্পতি ও শুক্রবার সিপিএমের পলিটবুরো বৈঠকের শেষে ইয়েচুরি বলেন, “নিজের শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি সিপিএম ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দলগুলিকে একজোট করার চেষ্টায় যোগ দেবে। বিহারে নতুন জোটের পরে এই প্রচেষ্টায় গতি এসেছে। রাজ্য স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে যত বেশি সম্ভব দলকে এককাট্টা করতে হবে। বিহার বা তামিলনাড়ুতে যেমন হয়েছে, রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, তার পিছনে বাকিদের জোটবদ্ধ হতে হবে। সেটা ফ্রন্ট গঠন হতে পারে বা আসন সমঝোতা।’’

এই সমীকরণ মেনে সিপিএমকে বাংলায় তৃণমূলের পিছনে দাঁড়াতে হয়! সেই সম্ভাবনা খারিজ করে ইয়েচুরির মন্তব্য, “ওখানে বিজেপি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাকিদের এককাট্টা হতে হবে।” যা শুনে রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, ইয়েচুরি ফের কংগ্রেস, সিপিএম জোটের দিকেই ইঙ্গিত করছেন। দু’দিন আগেই রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা কেরলে কেন ১৮ দিন ধরে চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সিপি‌এম। আজ ইয়েচুরি বলেছেন, সব দলেরই নিজের মতো কর্মসূচির অধিকার রয়েছে। তবে সিপিএমকে ‘বিজেপির এ টিম’ বলে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ কটাক্ষের জবাবে ইয়েচুরির উত্তর, “গোয়ার কংগ্রেসের বিধায়কদের দলবদলের পরে বোঝা যাচ্ছে, কে কার এ টিম, বি টিম।”

জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট নিয়ে ইয়েচুরির মত— জাতীয় রাজনীতিতে যখনই সরকার বদলের পরে বিকল্প জোট তৈরি হয়েছে, তা লোকসভা ভোটের পরেই হয়েছে। জনতা পার্টি, যুক্তফ্রন্ট, এনডিএ, ইউপিএ— সবই নির্বাচনের পরে তৈরি। তবে কিছু বিষয় নিয়ে বিরোধী দলগুলি একসঙ্গে সরব হতে পারে। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বা এনসিপি-র শরদ পওয়ার নিজেদের মতো করে জোটের চেষ্টা করছেন। দু’জনেই নীতীশের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। পওয়ার নীতীশকে বিরোধীদলগুলিকে নিয়ে বিভিন্ন শহরে সভা ডাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেখানে সবাই না-এলেও যত বেশি সম্ভব দলকে নিয়ে আসা হবে। ইয়েচুরিও এর সঙ্গে একমত। ২৫ সেপ্টেম্বর হরিয়ানায় আইএনএলডি-র ওমপ্রকাশ চৌটালার ডাকা সম্মেলনে তিনিও যোগ দিচ্ছেন।

দু’দিনের পলিটব্যুরো বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইয়েচুরির বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক মেরুকরণ সত্ত্বেও সিপিএম সমর্থন ফিরে পাচ্ছে। বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আমরা প্রচার কুড়োতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করি না। বাংলায় এখন প্রমাণিত যে সিবিআই, ইডি এত দিন চুপ করে বসেছিল। এত দিন কিছু করেনি। বিজেপির নিজের ষড়যন্ত্র রয়েছে। তৃণমূলের অপশাসনের মুখোশও খুলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sitaram Yechury TMC opposition alliance CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE