পাড়ায় ক্রিকেট খেলছিলেন এক দল যুবক। তাঁদের মধ্যে এক যুবক জোরে বল মারায় সেটি একটি পরিত্যক্ত বাড়ির মধ্যে গিয়ে পড়ে। বল আনতে ওই বাড়িতে ঢোকেন যুবকদের মধ্যে এক জন। প্রথমেই তাঁর নজরে পড়েছিল বাড়ির একটি ঘরের দরজা খোলা। একটু কৌতূহল হয় তাঁর। তার মধ্যে বল কোথায় পড়েছে সেটাও খুঁজছিলেন। ভেবেছিলেন ঘরে মধ্যেও হয়তো ঢুকে যেতে পারে ক্রিকেট বল। ওই ঘরে উঁকি মারতেই চিৎকার করে ওঠেন। তাঁর চিৎকার শুনে বাকি যুবকেরাও ছুটে আসেন।
সকলে দেখেন, ঘরের ভিতরে একটি কঙ্কাল। উপুড় হয়ে পড়ে। কঙ্কালটির পাশের বাসনপত্র ছড়ানো। এ ছাড়াও পুরনো অচল হয়ে যাওয়া ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিলও পড়ে রয়েছে কয়েকটা। কার কঙ্কাল? এ নিয়ে যখন এলাকায় জোর চর্চা চলছে, তখন ওই কঙ্কালের পাশ থেকে পুরনো একটি সাদা-কালো ফোন উদ্ধার হয়। আর সেই ফোন থেকেই কঙ্কালটি শনাক্ত করা হয়। ঘটনাটি হায়দরাবাদের। সোমবার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ওই কঙ্কালটি উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই বাড়িতে এক সময় মুনির খান নামে এক ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা থাকতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এক এক করে সব সদস্য বাড়ি ছেড়ে চলে যান। মুনিরের দশ সন্তান। তাঁদের সকলেই কর্মসূত্রে ওই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তার পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়েই পড়ে ছিল। তা হলে এই কঙ্কালটি কার? এ নিয়েই যখন কৌতূহল তুঙ্গে, মুনিরের পরিবারের এক সদস্যকে ডেকে আনা হয়। তিনিই কঙ্কালের পরনের প্যান্ট এবং আংটি দেখেই তাঁকে শনাক্ত করেন। ওই ব্যক্তির দাবি, কঙ্কালটি তাঁর দাদা তথা মুনীরের তৃতীয় সন্তান। সবাই ওই বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেও মুনিরের ওই পুত্র আমির খান পরে আবার এখানে চলে আসেন। তার পর সকলের অগোচরেই থাকা শুরু করেন। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, আমিরকে কোনও দিন তাঁরা দেখেনননি। ওই বাড়িতে কেউ থাকতেন, সেটাও তাঁরা জানতেন না।
হায়দরাবাদের অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) কিষাণ কুমার জানিয়েছেন, কঙ্কালের পাশে পড়ে থাকা একটি পুরনো ফোন উদ্ধার হয়েছে। সেই ফোনটিকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ২০১৫ সালে শেষ বার মোবাইলে ফোন এসেছিল। ৮৪টি মিস্ড কল। এসিপির কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন আমির। কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। হাড়গোড়ও প্রায় গুঁড়িয়ে যেতে বসেছে। তবে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলেই প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে।’’