Advertisement
E-Paper

সংসদে তৃণমূলকে ঠাঁই দিতে ঘরছাড়া ধূমপায়ীরা

দেশ ও দশের কাজ বলে কথা। বুদ্ধির গোড়ায় একটু ধোঁয়া না দিলে চলে। কিন্তু বাদল অধিবেশন চলাকালীন মন যদি একটু সিগারেট-সিগারেট করে, মন্ত্রী-সাংসদদের মতো দেশের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা যাবেন কোথায়?

অগ্নি রায় ও অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০৩:০৮

দেশ ও দশের কাজ বলে কথা। বুদ্ধির গোড়ায় একটু ধোঁয়া না দিলে চলে। কিন্তু বাদল অধিবেশন চলাকালীন মন যদি একটু সিগারেট-সিগারেট করে, মন্ত্রী-সাংসদদের মতো দেশের গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা যাবেন কোথায়? কারণ সংসদে সাংসদদের সুখটান দেওয়ার কক্ষটাই যে হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে! আর এই ঘটনায় ধর্মসঙ্কটে পড়েছেন ধূমপায়ী সাংসদ সৌগত রায়। প্রকারান্তরে তাঁর দল তৃণমূলের কারণেই যে তাঁর মতো ধূমপায়ীদের মাথার উপর ছাদ উড়ে গিয়েছে!

প্রায় ছ’বছর সংসদে ‘উদ্বাস্তু’ থাকার পর ঘর পেয়েছেন তৃণমূলের সাংসদরা। সংসদ ভবনের একতলায় যে ঘরটি (২০বি) তৃণমূলকে দেওয়া হয়েছে, সেটি আগে ছিল লোকসভার স্পিকারের টাইপিস্ট আর স্টেনোগ্রাফারদের। নতুন ব্যবস্থায় এই টাইপিস্টদের পাঠানো হয়েছে সেন্ট্রাল হলের লাগোয়া একটি কামরায়। যেটি এত দিন পর্যন্ত ছিল ধূমপায়ী সাংসদদের ধূমপান করার কক্ষ!

বাম-ডান সব সাংসদই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। সিপিএমের ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু পারছি কই!’’ তা হলে? সাংসদের উত্তর, ‘‘যত দিন না ছেড়ে উঠতে পারছি, তত দিন তো সংসদে এতটা সময় কাটাতে হলে একটি ধূমপানের ঘর প্রয়োজন। সবাই মিলে দাবি তুলতে হবে। প্রয়োজনে স্মারকলিপি দিতে হবে।’’ ঋতব্রতের সঙ্গে একমত বিজেপি সাংসদ চন্দন মিত্র। তাঁরও সাফ কথা, ‘‘এটা চলতে দেওয়া যায় না। আমরা যারা সিগারেট খাই, তারা সবাই মিলে কাল আলোচনায় বসব। আমাদের মধ্যে কয়েক জন মন্ত্রীও রয়েছেন। আমরা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এবং লোকসভার স্পিকারকে স্মারকলিপি দেব। এই বিষয়ে ঋতব্রতর সঙ্গে কথা হয়েছে।’’ চন্দন মিত্রের প্রশ্ন, ‘‘এর পর সাংসদরা লুকিয়ে সিগারেট খাবে। এতে কি সংসদের গরিমা বাড়বে?’’

কিন্তু অনেকেরেই মতে, সংসদের মতো জায়গায় সিগারেট খাওয়া বন্ধ হলে ভাল। সাংসদরা সংসদে সিগারেট খেলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যায়। সিগারেট তো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় স্পিকার থাকার সময় এই ধূমপান কক্ষ চালু হয়েছিল। অনেকেই জানান, সিগারেট খাওয়ার অছিলায় অনেক জরুরি কথাও সাংসদরা সেরে ফেলতেন ওই ঘরে। দলমত নির্বিশেষে কোনও কথাবার্তার প্রয়োজন, চল ধূমপান কক্ষে। লোকসভা বা রাজ্যসভার কক্ষ সমন্বয় বা অন্য বিষয়ে বিজেপির কোনও নেতা কি তৃণমূলের নেতার সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারছেন না? কেন, ধূমপান কক্ষ তো রয়েছে।

সেই ধূমপান কক্ষই এখন টাইপিস্টদের দখলে।

বিষয়টি নিয়ে লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেল অনুপ মিশ্রের সঙ্গে কথা বলেছেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘‘স্পিকার এবং চেয়ারম্যানের প্যানেলে যাঁরা থাকেন, তাঁদের একটা বড় ঘর রয়েছে, যেটা খুব একটা কাজে আসে না। সেটিরই একটা অংশ ধূমপায়ীদের দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে অনুপ আমাকে জানিয়েছেন।’’

কয়েক মাসে সিগারেট খাওয়া বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে তৃণমূলের এক সাংসদের। অধিবেশন না চললে সেই মুকুল রায়কে প্রায়ই দেখা যেত ধূমপান কক্ষে। মুকুল বলছেন, ‘‘সিগারেটে শরীর খারাপ হবে জেনেও আমরা খাই। কিন্তু যদি ঘরই না থাকে তবে সেটাই মেনে নিতে হবে। সংসদে আর সিগারেট খাওয়া হবে না!’’

agni roy anamitra sengupta stenographers smoker mp smoking room parliament typist parliament smoking room chandan mitra saugata roy smoker mps chain smoker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy