Advertisement
E-Paper

নীতীশের সঙ্গে জোট গড়তে লালুকে হুঁশিয়ারি সনিয়ার

বিধানসভা ভোট থেকে মাত্র চার মাস দূরে দাঁড়িয়ে বিহার। এখনও সেখানে লালু-নীতীশ জোট হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় অব্যাহত। এই অবস্থায় ময়দানে নামলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী। জোট গড়ার জন্য লালুর উপর চাপ বাড়ালেন তিনি।

শঙ্খদীপ দাস

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৩:৩৩

বিধানসভা ভোট থেকে মাত্র চার মাস দূরে দাঁড়িয়ে বিহার। এখনও সেখানে লালু-নীতীশ জোট হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় অব্যাহত। এই অবস্থায় ময়দানে নামলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী। জোট গড়ার জন্য লালুর উপর চাপ বাড়ালেন তিনি।

কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে খবর, লালু প্রসাদকে সনিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নীতীশ কুমারের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে তিনি মহাজোটে সামিল না হলে তাঁকে বাদ দিয়েই জোট হবে। মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশ কুমারকে তুলে ধরে সংযুক্ত জনতা, কংগ্রেস এবং সিপিআই মিলে জোট গড়বে।

নীতীশ, লালু প্রসাদ ও কংগ্রেস জোট বাঁধলে ফল যে ভাল হতে পারে, তা লোকসভা নির্বাচনের ঠিক পরে পরে বিধানসভার উপনির্বাচনেই তার প্রমাণ মিলেছিল। পরে বিহারে রাজ্যসভা নির্বাচন ও বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ক্ষেত্রেও তা কার্যকরী হয়েছিল। কংগ্রেসের আশা, এই সমীকরণ বিহার বিধানসভা ভোটেও বজায় থাকলে চাপ বাড়বে বিজেপির উপর। কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলের এক বছরের মাথায় বিহারের মতো রাজ্যে বিজেপিকে হারানো গেলে সর্বভারতীয় স্তরে রাজনীতিরও হাওয়া ঘুরবে বলে আশা সনিয়ার। তাই নীতীশ-লালু-মুলায়মের দল মেশার ঘোষণায় খুশি ছিলেন তিনি।

কিন্তু বিহারে ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে, লালু-নীতীশ জোট বেঁধে লড়া নিয়ে ধোঁয়াশা ততই বাড়ছে। দুই দল মিশে যাওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কংগ্রেস নেতাদের মতে, মূল সমস্যা তৈরি করছেন লালুই। তাঁর দল আরজেডি নেতাদের একাংশ কখনও নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী করে ভোটে যেতে আপত্তি জানাচ্ছেন তো কখনও আবার অর্ধেক আসন চেয়ে বসছেন।

কংগ্রেস নেতাদের মতে, এটা ঠিক যে লালুর কাছে যাদব ভোট রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নীতীশের বিকল্প নেই। বিশেষ করে বিজেপি যখন মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বাছার ব্যাপারে ইতস্তত করছে, তখন নীতীশকে সামনে রেখে ভোটে গেলে তার সুফল পাওয়া যেতে পারে।

এটা কি লালু বুঝতে পারছেন না? কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক নেতা বলেন, যাদব ভোট সঙ্গে থাকলেও বিহারে লালু এখন প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বিজেপির হাতে লালু তামাক খাচ্ছেন বলেও সন্দেহ কংগ্রেসের। কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, লোকসভা ভোটের সময়ই লালুর এই মতিগতি নিয়ে সনিয়া-রাহুলকে লিখিত রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন বিহার কংগ্রেসের নেতা শাকিল আহমেদ।

সনিয়াকে শাকিল এ-ও জানিয়েছিলেন, বিজেপি-রামবিলাস পাসোয়ানের বনিবনার মূলে ছিলেন লালু। তিনিই রামবিলাসকে অমিত শাহর কাছে পাঠান। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তখন সনিয়া-রাহুলের কাছে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য না হলেও এখন তাঁরা বুঝতে পারছেন ইচ্ছে করেই গোল পাকাতে শুরু করেছেন লালু। সেই কারণেই এখন লালুকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন সনিয়া।

সভানেত্রীর এই চাপ কাজে আসতে পারে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের মতে লালু একা ভোটে লড়লে তাঁর আরও করুণ অবস্থা হতে পারে। আবার বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধাও তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শেষ পর্যন্ত অস্তিত্ব বজায় রাখতে মহাজোটে সামিল হওয়ার জন্য চাপ বাড়বে লালুর উপর। নইলে তাঁর দলেও ভাঙন ধরতে পারে। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রের খবর, এই অবস্থায় লালু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার প্রস্তাব দিয়ে সনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন। কিন্তু তাতে রাজি নন সনিয়া-রাহুল। এমনকী তাঁদের শর্ত না মানলে লালুর সঙ্গে দেখা করতেও মা-ছেলে রাজি নন বলে আরজেডিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে নীতীশের সঙ্গে দূত মারফত যোগাযোগ রাখছেন রাহুল। জোট নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে সংযুক্ত জনতা সভাপতি শরদ যাদব বলেন, ‘‘কিছু জটিলতা এখনও রয়েছে ঠিকই। কিন্তু আশা করছি শেষ পর্যন্ত বিহারে লালু-নীতীশ-কংগ্রেস জোট হবে। বামেরাও সঙ্গে থাকবেন।’’

Nitish Kumar Sonia Gandhi Lalu Prasad sankhadip das BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy