E-Paper

মধ্যস্থতার দাবি আবার খারিজ করল নয়াদিল্লি

আজ বিদেশমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে জানান বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সে সময়ে বিভিন্ন সাংসদ আমেরিকারপ্রসঙ্গ তুলেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ০৭:৪৭

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরপর সাত বার সমাজমাধ্যমে দাবি করেছেন, তাঁরাই মধ্যস্থতা করে শান্তির সওদা করেছেন যুযুধান ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে। এই নিয়ে সরাসরি ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে কোনও বিবৃতি না দেওয়া হলেও সাউথ ব্লক বুঝিয়ে দিতে চাইছে,ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ভাবেই এই সংঘর্ষবিরতি হয়েছে। তৃতীয় রাষ্ট্রের এখানে কোনও ভূমিকা ছিল না।

আজ বিদেশমন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে জানান বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। সে সময়ে বিভিন্ন সাংসদ আমেরিকারপ্রসঙ্গ তুলেছেন। ট্রাম্প কেন মঞ্চের মাঝখানে অধিষ্ঠান করতে চাইছেন, বিরোধী সাংসদদের এই প্রশ্নে প্রথমে হালকা চালে বিদেশসচিব বলেন, তিনি তো ট্রাম্পকে মাঝখানে বসার জন্য নিমন্ত্রণ করেননি! ফলে তাঁর আর এই বিষয়ে কী বলার আছে! পরে তিনি বলেন, অন্য কোনও রাষ্ট্রের (আমেরিকার) মধ্যস্থতা করার কোনও বিষয়ই নেই। যা হয়েছে, দু’দেশের ডিজিএমও-র কথার ভিত্তিতেই হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই কমিটির সদস্য তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সরকারকে প্রশ্ন করেন, ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবির বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ভাবে আমেরিকাকে নিজেদের অসন্তোষ নয়াদিল্লি জানিয়েছে কি না। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এই প্রশ্নের বিশদে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।

তবে কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, এর আগে যত বার ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বা যুদ্ধ হয়েছে, আমেরিকা মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে এসেছে। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত রিপাবলিকান বা ডেমোক্র্যাট, নির্বিশেষে আমেরিকাকে অতি সক্রিয় করে তোলে। ট্রাম্প সেই উদ্বেগকে নিজের সুবিধা অনুযায়ী এবং স্বভাবসিদ্ধভাবে চড়িয়ে দিয়েছেন, এমনই মনে করা হচ্ছে।

নয়াদিল্লি সূত্রে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, সে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স এবং বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো ট্রাম্পের চোখ এবং কান হয়ে নিরন্তর দৌত্য করেছেন ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে। তাঁরা মধ্যস্থতার জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন, এমনটাও ঠিক। কিন্তু তাঁরা ‘ইতিমধ্যেই খোলা দরজাই খোলার চেষ্টা করেছিলেন’ বলে মত কূটনৈতিক শিবিরের। সংঘাত অব্যাহত থাকলেও ভারত এবং পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রই তখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, যেখান থেকে গুটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। ভারত ততক্ষণে পাকিস্তানের বড়সড় সন্ত্রাসঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বিমানঘাঁটিগুলিকে নিশানায় এনে ফেলেছে। অন্য দিকে পাকিস্তানও তখন দাবি করেছিল, তারা ভারতের যুদ্ধবিমান আকাশ থেকে নামিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধবিরতি হলে নিজেদের দেশে বড় রকম রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে না, এমনটাই ছিল হিসাব। তাই ডিজিএমও স্তরে আলোচনায় সংঘাতবিরতির সিদ্ধান্ত হয়ে যায়।

তবে কংগ্রেস এ প্রসঙ্গে আজ খোঁচা মারতে ছাড়েনি মোদী সরকারকে। দলের নেতা পবন খেরার কথায়, “নরেন্দ্র মোদী তো জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করেছেন! তিনি কেন ডোনান্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাবেন? তা ছাড়া, ট্রাম্প তো তাঁর বন্ধু। ছ’মাস হয়ে গেল, আমেরিকা এখনও কেন রাষ্ট্রদূত পাঠায়নি ভারতে? তবে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে এখানে জয়শঙ্কর অবশ্য রয়েছেন!”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India-Pakistan India Pakistan Ceasefire USA South Block

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy