স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির পক্ষেই এ বার স্পিকারদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, দেশের লোকসভা ও বিধানসভার স্পিকারদের সম্মেলনের প্রেক্ষিতে এই প্রশ্ন তুলল পশ্চিমবঙ্গ। তবে মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে এই রকমই একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
রাজনৈতিক স্তরে ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি চালু করতে চায় বিজেপি। দীর্ঘ দিন ধরে কেন্দ্রের শাসক দলের তরফে এই মতের পক্ষে সওয়াল করা হচ্ছে। এ বার সেই প্রশ্নই উঠেছে সম্প্রতি মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত দেশের সব স্পিকারদের সম্মেলনে। দু’দিনের আলোচনা শেষে সেখানে যে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়েছে, তার একেবারে শেষটির সূত্রেই এই প্রশ্ন তুলেছেন সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি, রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রস্তাব গ্রহণ পর্বে হাত তুলে নিজের আপত্তি নথিবদ্ধ করিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। স্পিকারের কথায়, ‘‘ওই প্রস্তাবকে প্রস্তাবিত ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির পক্ষে এগোনো বলেই মনে করছি। তাই আমি আপত্তি জানিয়েছি। কিন্তু বাকিরা তা করেননি।’’
গত ২৭ ও ২৮ তারিখের ওই সম্মেলনে ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। তাঁদের উপস্থিতিতেই এ বারের সম্মলেন সরাসরি কিছু রাজনৈতিক প্রশ্ন তুলেছেন এ রাজ্যের স্পিকার। সূ্ত্রের খবর, সম্মেলনের শেষ পর্বে গৃহীত প্রস্তাব পড়া শুরু করেন লোকসভার স্পিকার। সেখানে অন্য বিষয়ের সঙ্গে প্রস্তাব হিসেবে বলা হয়, ‘সম্মেলনে স্থির হয়েছে, ‘দেশের সব প্রিসাইডিং অফিসারেরা (স্পিকার) ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান লেজিসলেটিভ প্ল্যাটফর্ম’ কাযর্কর করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নেবেন। এবং জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ নাগরিকের সঙ্গে মত বিনিময়ের লক্ষ্যেই তা করা হবে।’ তখনই বিমান হাত তুলে আপত্তি জানাতে চান। এবং লোকসভার স্পিকার তাঁর কথা শুনতে চাইলে তিনি ওই প্রস্তাবে বিধানসভার ক্ষমতা ও এক্তিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সভায় তিনি বলেন, ‘এ তো দেশের সংবিধানে বর্ণিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভাবনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বরং, ‘এক দেশ, এক ভোট’ কার্যকর করার পক্ষে একটি পদক্ষেপ। আমি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছি।’ কলকাতায় ফিরে তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রস্তাব হিসেবে গ্রহণ করতে চাইলেও বিষয়টি নিয়ে গোটা সম্মেলনে আলোচনাই হয়নি।’’
শুধু তা-ই নয়, ওই সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার ইডি, সিবিআইয়ের মতো তদন্ত সংস্থা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এখানে বিধায়কেরা এজেন্সির চাপের জন্য কমিটির কাজ করতে পারেন না। সর্বভারতীয় স্তরে তা জানিয়েছি।’’ সেই সঙ্গেই মহুয়া মৈত্রের বহিষ্কার নিয়ে আলোচনার সূত্রে স্পিকার এ রাজ্যের ওই ‘প্রাক্তন’ সাংসদ বিচার পাননি বলেও মন্তব্য করেছেন সম্মেলনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy