কর্নাটকের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জি জনার্দন রেড্ডি-সহ চার জনকে ‘ওবুলাপুরম মাইনিং কোম্পানি’ (ওএমসি) অবৈধ খনি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করল বিশেষ সিবিআই আদালত। সাত বছরের জেলের পাশাপাশি বল্লারীর কুখ্যাত খনি মাফিয়া হিসাবে পরিচিত রেড্ডি ব্রাদার্সের ‘প্রধান মুখ’ বিধায়ক জনার্দনের এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে আদালত।
রায় ঘোষণার পরেই রেড্ডিদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, কর্নাটক-অন্ধ্রপ্রদেশ সীমান্তে খনির ইজারা-এলাকার সীমানা ছাড়িয়ে অবৈধ ভাবে বল্লারী সংরক্ষিত আকরিক লোহার খনির কাজ চালানোর অভিযোগে রেড্ডি এবং অন্যদের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দাখিল করার প্রায় ১৪ বছর পরে তাঁদের সাজা হল।
বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক টি রঘু রাম এই মামলার অন্য দুই অভিযুক্ত, তেলঙ্গানার প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিআরএস নেত্রী সবিতা ইন্দ্র রেড্ডি এবং প্রাক্তন আমলা বি কৃপানন্দমকে প্রমাণের অভাবে মুক্তি দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, নব্বইয়েই দশকে বিজেপির হাত ধরে বল্লারীর খনি মাফিয়া হিসেবে রেড্ডি ব্রাদার্সের উত্থান ঘটেছিল। সিবিআই তাদের চার্জশিটে ‘দেশের ইতিহাসের সব চেয়ে বড় খনি কেলেঙ্কারির মাথা’ বলে তাঁকে চার্জশিটে অভিহিত করেছিল রেড্ডি ব্রাদার্সের প্রধান জনার্দনকে। তাঁর এক ভাই জি করুণাকর রেড্ডিও কর্নাটকে বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। আর এক ভাই জি সোমশেখর রেড্ডি ছিলেন বল্লারীর বিজেপি বিধায়ক।
আরও পড়ুন:
খনি দুর্নীতি মামলায় ইউপিএ জমানায় সিবিআই গ্রেফতার করেছিল জনার্দনকে। কিন্তু ২০১৫-য় জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসেন বিপুল অর্থবলে বলীয়ান ওই নেতা। আদালত তাঁর বল্লারীতে যাতায়াতের উপর নানা শর্ত আরোপ করে। এর পরে ২০২৩ সালে কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে তাঁর অজস্র কুকীর্তি নিয়ে এত চর্চা হয়, বিজেপি দূরত্ব রচনা করে। অমিত শাহ প্রকাশ্যে বলেন, রেড্ডির সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। সেই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ছেড়ে কেআরপিপি (কল্যাণ রাজ্য প্রগতি পক্ষ) নামে নিজস্ব দল তৈরি করে নির্বাচনে লড়েন জনার্দন রেড্ডি। সেই ভোটে কংগ্রেসের কাছে বিজেপি পরাজিত হয় কর্নাটকে। কিন্তু জনার্দন গঙ্গাবতী কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন। এর পরে ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে ফিরেছিলেন জনার্দন।