সব ঠিক থাকলে, আগামী মাসেই বেছে নেওয়া হবে বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতে, আসন্ন বাদল অধিবেশনের আগেই নতুন সভাপতি বেছে নেওয়ার কাজ সেরে ফেলা হবে। কারণ, বছর শেষে বিহারের ভোট। সেই ভোটের আগে নতুন সভাপতি যাতে যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পান তাই দ্রুত সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলার পক্ষপাতী দল।
চলতি সপ্তাহে মোদী সরকার এগারো বছর পূর্ণ করেছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নেওয়ার কাজটি বিভিন্ন কারণে অনেক দিন ধরে আটকে রয়েছে। তাই দ্রুত বিষয়টি সেরে ফেলার পক্ষপাতী দল। সূত্রের মতে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নেওয়ার আগে অন্তত ১৯টি রাজ্যে রাজ্য সভাপতি নির্বাচন করতে হবে দলকে। ইতিমধ্যে ১৪টি রাজ্যে ওই নির্বাচন সাঙ্গ হয়েছে। তাই উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে এ মাসের মধ্যেই সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, “১৫ অগস্টের পর থেকেই দল বিহার নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জোরকদমে নেমে পড়তে চলেছে। কারণ, বিহার নির্বাচন হতে চলেছে নতুন সভাপতির প্রথম পরীক্ষা। তার আগে নতুন সর্বভারতীয় সভপাতি যাতে নিজের দল গঠন করে ওই নির্বাচনে ঝাঁপাতে পারেন সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে।’’
বিজেপি সূত্রের মতে, সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শিবরাজ সিংহ চৌহান, মনোহরলাল খট্টর ও ধর্মেন্দ্র প্রধান। এদের মধ্যে প্রথম দু’জন সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ। উপরন্তু বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। দু’জনেই দলে দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত। অন্য দিকে, ধর্মেন্দ্র প্রধান দলে অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সূত্রের মতে, জে পি নড্ডার পরে ধর্মেন্দ্রকেই পরবর্তী সভাপতি হিসেবে দেখতে চাইছেন দলের একটি বড় অংশ। মৃদুভাষী, ওবিসি সমাজের নেতা ধর্মেন্দ্র পূর্ব ভারতের প্রতিনিধি।
এ ছাড়াও শেষ পর্যায়ে দৌড়ে উঠে এসেছেন সুনীল বনসল ও রঘুবর দাস। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে থাকা দলের সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল দক্ষ সংগঠক। সম্প্রতি এগারো বছর পূর্তি উপলক্ষে হওয়া দলের সাংবাদিক বৈঠকে বর্তমান সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বনসল। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, নড্ডার পাশে বনসলের ওই উপস্থিতি যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ। তা ছাড়া ওড়িশা জেতার কারিগরও তিনি। দলের লক্ষ্যই হল, বনসলকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বারের জন্য বিজেপিকে জিতিয়ে আনা। সভাপতি হওয়ার দৌড়ে রয়েছে ওড়িশার রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ফের বিজেপিতে যোগদানকারী রঘুবর দাসের নাম। মূলত ঝাড়খণ্ডে দলের হারের পরে ওই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসার নির্দেশ দেয় দল। ওবিসি ওই নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ। আরএসএস নেতৃত্বেরও কাছের লোক তিনি। দলের একটি অংশের বক্তব্য, রঘুবরকে সভাপতি করা হলে ঝাড়খণ্ডবাসীর পাশাপাশি ওবিসি সমাজের নেতাকে দলের শীর্ষ পদে বসিয়ে সমাজের ওই অংশকে বার্তা দেওয়া যাবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)